শিরোনাম
বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
তৃণমূল বিএনপি

শমসের চেয়ারম্যান মহাসচিব তৈমূর

নিজস্ব প্রতিবেদক

শমসের চেয়ারম্যান মহাসচিব তৈমূর

তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়েই দলটির শীর্ষ নেতৃত্বে এসেছেন বিএনপির সাবেক দুই নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকার। সমশের মবিন চৌধুরী তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান আর তৈমূর আলম দলটির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন। তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদাকে দলটির নির্বাহী চেয়ারপারসন নির্বাচিত করা হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের প্রথম সম্মেলন ও কাউন্সিলে দলটির ২৭ সদস্যের কমিটি নির্বাচন করা হয়। সমশের মবিন চৌধুরী বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। আর তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

কাউন্সিলে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল ইসলামী জোটের চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল, বিএলডিপির চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস, প্রগতিশীল ন্যাপের আহ্বায়ক পরশ ভাসানীসহ আরও অনেকে।

তৃণমূল বিএনপির সম্মেলনে যোগ দিয়ে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, দল পরিবর্তন হলেও তাঁর রাজনৈতিক লক্ষ্য পরিবর্তন হয়নি। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কাজ করবেন। এক প্রশ্নের জবাবে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, তৃণমূল বিএনপি একটি স্বাধীন রাজনৈতিক দল। এই দলের চিন্তাভাবনা নিজেদের। এটি ‘কিংস পার্টি’ নয়, এটি জনগণের পার্টি। কিংস পার্টি গঠিত হয়েছিল এক-এগারোর সময়।

তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, বিএনপি তাঁকে বহিষ্কার করার পর দেড় বছর অপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, তৃণমূল বিএনপি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হবে না। এখানে কাউকে অবজ্ঞা বা অবহেলা করা হবে না। তিনি বলেন, দলে আলোচনা করে আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। উদ্বোধনী বক্তব্যে অন্তরা সেলিমা হুদা বলেন, তাঁরা আশা করেন সমশের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে তৃণমূল বিএনপি শক্তিশালী ও গতিশীল হবে।

এ ছাড়া কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন আক্কাস আলী খান। ভাইস চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন কে এ জাহাঙ্গীর মজুমদার, মেজর (অব.) ডা. হাবিবুর রহমান, মোখলেসুর রহমান ফরহাদী, দীপক কুমার পালিত, মেনোয়াল সরকার, ছালাম মাহমুদ। যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান, ফয়েজ চৌধুরী, তালুকদার জহিরুল হক, রোখসানা আমিন সুরমা। কোষাধ্যক্ষ (ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদা) নির্বাচিত হয়েছেন শামীম আহসান। সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শাহজাহান সিরাজ (বরিশাল), আকবর খান (চট্টগ্রাম)। সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল মোড়ল, দফতর সম্পাদক হিসেবে এ কে সাইদুর রহমান এবং মো. রাজু মিয়া, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কাজী ইব্রাহীম খলিল সবুজ, যুব বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে শাহাবউদ্দিন ইকবাল, আইনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে অ্যাডভোকেট আশানুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক স্থপতি নাজমুস সাকিব, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে সাগর ঘোষ এবং স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফরহাদ হোসেন।

উল্লেখ্য, তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হুদা। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে দুই দফায় খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০১২ সালে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিএনএফ নামে নতুন দল গঠন করেন। পরে সেই দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করেন দলটির প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। এরপর বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (বিএনএ) এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমপি) নামে দুটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন নাজমুল হুদা। এরপর ‘তৃণমূল বিএনপি’ গঠন করেন তিনি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। কমিশন তখন তাদের নিবন্ধন দেয়নি। পরে দলটি আদালতের দ্বারস্থ হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ফেব্রুয়ারিতে তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দেয় ইসি। নিবন্ধন পাওয়ার কয়েকদিনের মাথায় নাজমুল হুদা মারা যান। পরে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা। আজ দলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হলো।

সর্বশেষ খবর