বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারতে যাচ্ছে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ

পশ্চিমবঙ্গে খুশির আমেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক ও কলকাতা প্রতিনিধি

কিছু শর্ত দিয়ে ৭৯ প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর নামের তালিকা ও রপ্তানির পরিমাণ উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ইলিশ মাছ রপ্তানি বিষয়ে প্রাপ্ত আবেদন যাচাইবাছাইক্রমে শর্ত সাপেক্ষে নির্ধারিত পরিমাণ ইলিশ রপ্তানির অনুমতি প্রদান করা হলো। ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এ সুবিধা পাবে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশের বাজারে ইলিশের জোগান কম থাকা এবং দাম বেড়ে যাওয়ায় ২০১২ সাল থেকে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ রাখে সরকার। তবে শারদীয় উৎসব উপলক্ষে শর্ত সাপেক্ষে প্রতি বছর সীমিত পরিমাণে দেশের এই সুস্বাদু মাছটি পাশের দেশটিতে রপ্তানির অনুমতি দিয়ে আসছে।

ভারতের দিক থেকে এবারের পূজায় ৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের চাহিদা থাকলেও সরকার তার চেয়ে প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টন কম অনুমতি দিল। গত সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ‘ইলিশ রপ্তানির কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। শুধু দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১৫ দিন বা এক মাসের জন্য আমরা কিছু ইলিশ পাঠাই (ভারতে)। সারা বছর প্রায় ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয় দেশে। তা থেকে আমরা বড়জোর ৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ পাঠাতে পারি। এটি আমাদের দুই দিনের উৎপাদনও না।’

গত বছর শারদীয় উৎসবে দুই দফায় ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ৪ হাজার ৬০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও অনেকেই তা করেনি। এ কারণে এবার যাতে অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে পণ্যটি রপ্তানি করে সে বিষয়ে নজরদারি চালানো হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, রপ্তানির অনুমতি নিয়ে গতবার কিছু প্রতিষ্ঠান ইলিশ না পাঠানোর কারণে এবার যাচাইবাছাই করে ৭৯ প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শর্তানুসারে প্রতি প্রতিষ্ঠান ৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির সুযোগ পাবে। অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না। এ ছাড়া পণ্য জাহাজিকরণের পর কাগজপত্র সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতরে মেইলে জমা দিতে হবে।

বাংলাদেশি ইলিশের খবরে পশ্চিমবঙ্গে খুশির আমেজ : আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে। মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, আজ বৃহস্পতিবার বিকালের মধ্যেই পেট্রাপোল-বেনাপোল স্থলবন্দর পেরিয়ে বাংলাদেশি ইলিশ চলে আসবে পশ্চিমবঙ্গে। শুক্রবার সকাল থেকেই সাধারণ মানুষের নাগালে চলে যাবে এই সুস্বাদু মাছ।

রাজ্যটির ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ গতকাল বিকালে বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছি। আজ থেকেই এই মাছ পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে শুরু করবে। পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার থেকে সাধারণ মানুষ এই মাছ পাবে। তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই এই মাছ নিয়ে আসতে হবে। তারপরে আর এই মাছ আনা যাবে না। সেক্ষেত্রে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের বাজারগুলোতে পাওয়া যাবে এই ইলিশ।’ তার অভিমত, শুরুর দিকে প্রথম দু-এক দিন এই মাছের দাম একটু বেশি থাকবে। এরপর ধীরে ধীরে মাছের দাম সাধারণ মধ্যবিত্তের নাগালে চলে আসবে। পাইকারি বাজারে এক কেজি ওজনের মাছ ১০০০ থেকে ১১০০ রুপি হতে পারে বলেও তার ধারণা।

সর্বশেষ খবর