শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভৈরব-সিলেট রোডমার্চ নির্দলীয় সরকার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভৈরব-সিলেট রোডমার্চ নির্দলীয় সরকার দাবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে রোডমার্চ শুরুর আগে জনসভায় বক্তৃতারত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচির জন্য নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমরা এখনো হরতাল-অবরোধ দিইনি। আমাদের এবারের আন্দোলন ‘ডু অর ডাই’। হয় মরব, নয়তো লড়ব। দেশের মানুষকে মুক্ত করব, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব এবং দেশের মানুষকে মালিকানা ফেরত দেব। গতকাল সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরববাজার বাসস্ট্যান্ডে সিলেটমুখী রোডমার্চ কর্মসূচির উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবিতে এ রোডমার্চ কর্মসূচি দেয় বিএনপি। ভৈরববাজার ছাড়াও রোডমার্চ কর্মসূচিকে স্বাগত জানাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, সরাইল বিশ্বরোডের মোড় ও কুট্টাপাড়া, বিজয়নগর উপজেলার এলাকাসহ মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীর ঢল নামে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন স্লোগানের ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে সমবেত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা এস এন তরুণ দের নেতৃত্বে সবচেয়ে বড় শোডাউন করেন এ এলাকার নেতা-কর্মীরা। পরে হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার হয়ে সিলেটে গিয়ে রোডমার্চ কর্মসূচি শেষ হয়। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, হরতাল দেওয়ার দরকার আছে? অবরোধ দেওয়ার দরকার আছে? কঠোর কর্মসূচি দিলে আপনারা পালন করবেন? প্রশ্নের উত্তরে নেতা-কর্মীরা দুই হাত তুলে সমস্বরে বলেন, ‘হ্যা’ আছে, ‘হ্যা’ আছে। তিনি বলেন, আমরা আগুন দিয়ে মানুষ মারি না, আমরা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াই না। আমরা তো পথচারীদের বস্ত্র হরণ করি না। আমরা হরতাল করিনি, কিন্তু করব না সেই প্রতিজ্ঞাও করিনি। সরকার বিদায়ে সব ধরনের কর্মসূচিই নেওয়া হবে। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেশ আলী মামুন, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য লায়লা বেগম, শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ৫০ লাখ গায়েবি মামলা নিয়ে আছি। প্রতিদিন আদালতে হাজিরা দিতে দিতে সময় পার হয়ে যায়। এ সরকার বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিচারকরাও এখন রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রধান বিচারপতি ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে ফুল নেন।

এর মাধ্যমে বিচার বিভাগ থেকে সাধারণ মানুষের অবশিষ্ট আস্থাও শেষ হয়ে গেছে। যার কারণে মার্কিন ভিসানীতিতে বিচারকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। র‌্যাবের বিরুদ্ধে স্যাংশন দেওয়া হয়েছে।

আজ ঢাকায় বিএনপির দুই সমাবেশ : এক দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ঢাকায় দুটি সমাবেশ করবে দলটি। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি বিকাল ৩টায় আবদুল্লাহপুর পলওয়ে মার্কেটসংলগ্ন ময়দানে সমাবেশ করবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি বিকাল ৩টায় যাত্রাবাড়ী শহীদ ফারুক সড়কে সমাবেশ করবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বিশেষ অতিথি থাকবেন কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

সমমনা দলগুলোর সমাবেশ : এদিকে বিএনপির সমমনা দলগুলো আজ পৃথক সমাবেশ করবে। ১২-দলীয় জোট বিকাল ৪টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকসংলগ্ন এলাকায়, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বিকাল ৩টায় পুরানা পল্টন আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে, এলডিপি বিকাল ৩টায় কারওয়ানবাজার এফডিসিসংলগ্ন এলডিপি অফিসের সামনে, গণ অধিকার পরিষদ বিকাল ৩টায় উত্তর বাড্ডা ফুটওভার ব্রিজসংলগ্ন সমাবেশ শেষে রামপুরা অভিমুখে পদযাত্রা করবে। গণ অধিকার পরিষদ (রেজা কিবরিয়া-ফারুক হাসান) বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে।

সর্বশেষ খবর