রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারত কানাডা পাল্টাপাল্টি সন্ত্রাস-নাশকতার অভিযোগ

প্রতিদিন ডেস্ক

ভারত কানাডা পাল্টাপাল্টি সন্ত্রাস-নাশকতার অভিযোগ

কানাডায় ভারতের খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকান্ড নিয়ে তুঙ্গে ওঠা ভারত-কানাডা বিরোধে এবার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তোলা হয়েছে। ভারত অভিযোগ করে বলেছে, কানাডা এখন সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। অন্যদিকে কানাডার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দিল্লিতে জি২০ সম্মেলন শেষে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানে যে ত্রুটি দেখা দিয়েছিল সেটি নাশকতা। সূত্র : সিএনএন, রয়টার্স, আলজাজিরা। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘কানাডা এখন সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনি সুনাম সংক্রান্ত এবং সুনামের ক্ষতির বিষয়ে যদি কথা বলেন তাহলে কানাডার কথা বলতে হয়। সন্ত্রাসী চরমপন্থি এবং সংগঠিত অপরাধের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে দেশটির খ্যাতি বাড়ছে।’  আরেক খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বের শিল্পোন্নত ও ধনী অর্থনীতির জোট জি২০-এর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের নয়াদিল্লি সফর করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তবে নির্ধারিত সময়ে দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। উড়োজাহাজে ত্রুটির কারণে সফরসঙ্গীসহ অতিরিক্ত ২৪ ঘণ্টা তাঁকে ভারতে কাটাতে হয়। এ ঘটনা উড়োজাহাজাজের ‘কারিগরি ত্রুটি’ নাকি ‘নাশকতা’-এমন প্রশ্ন উঠেছে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিল ব্লেয়ারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গেছেন তিনি। বলেছেন, ‘এই বিষয়ে আমি এখন কোনো মন্তব্য করব না। তবে এটি নিয়ে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে।’ বিল ব্লেয়ারের এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাঁর প্রেস সেক্রেটারি ড্যানিয়েল মিনদেন। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে বহনকারী উড়োজাহাজে নাশকতার চেষ্টা করা হয়েছিল, কানাডার পক্ষ থেকে এমনটা এখনই বিশ্বাস করার কারণ নেই। তবে দাফতরিক সূত্রে বলা হয়, দিল্লিতে আটকা পড়া অবস্থায় নিজেদের উড়োজাহাজে ট্রুডোকে দেশে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু কানাডা তাতে রাজি হয়নি। বরং দেশ থেকে প্রকৌশলী পাঠিয়ে উড়োজাহাজ ঠিকঠাক করার পর ট্রুডো ও তাঁর সফরসঙ্গীদের কানাডায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

বিরোধ নিয়ে বিশ্লেষণ : ভারতের ওপর কানাডার আনা অভিযোগ, নয়াদিল্লির জন্য নয়, কানাডার জন্যই বেশি বিপজ্জনক। এমনই দাবি করেছেন পেন্টাগনের প্রাক্তন প্রধান মাইকেল রাবিন। তাঁর দাবি, যদি কোনো দিন নয়াদিল্লি ও অটোয়ার মধ্যে কাউকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বেছে নিতে হয়, তবে অবশ্যই তারা ভারতকে বেছে নেবে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারতের বন্ধু ও তাদের সঙ্গে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কৌশলগত ও কূটনৈতিক দিক থেকে ভারত কানাডার চেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশি ওজনদার।

রাবিন আরও বলেছেন, ‘ভারত ও কানাডার মধ্যে এই ঠান্ডা লড়াই ঠিক যেন একটা হাতির সঙ্গে পিঁপড়ার যুদ্ধের মতো, যা গোটা বিশ্বের কাছেই বেশ হাস্যকর।’ বিশ্বনেতাদের তালিকায় জাস্টিন ট্রুডোর স্থান যে বেশ দুর্বল ও অ্যাপ্রুভাল রেটিংয়ে তিনি যে বেশ নিচের দিকেই রয়েছেন, তা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন রাবিন। তিনি বলেছেন, অ্যাপ্রুভাল রেটিংয়ে ট্রুডোর স্থানই বলে দেয় কানাডার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের শীর্ষে বেশিদিন তিনি থাকবেন না। আর তাঁর চলে যাওয়ার পরেই কানাডার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা শুরু করবে আমেরিকা।

সর্বশেষ খবর