রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগ

সংবিধান অনুযায়ী হবে নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংবিধান অনুযায়ী হবে নির্বাচন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পান না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি ভিসানীতি যেন পক্ষপাতমূলক না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে সংবিধান অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। গতকাল আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। যৌথভাবে সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। দুপুরের পর থেকে মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী-অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘যারা স্বাধীনতাযুদ্ধে আমাদের সমর্থন দেয়নি, সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল, অস্ত্র দিয়ে পাকবাহিনীকে সাহায্য করেছিল তাদের মোকাবিলা করেই আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। পরাজিত হইনি। আজকে তাদের বলতে চাই, মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমা বিশ্বের কিছু দেশ ও নেতা দ্বারা আপনারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ১২৬ ধারায় সুস্পষ্ট লেখা আছে, অল দি এক্সিকিউটিভ উইল অ্যাসিস্ট ইলেকশন কমিশন টু হোল্ড আ ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন। এ ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী, আইজিপি, সকল শ্রেণির কর্মকর্তা মিলে আমরা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করব একটি সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচনের জন্য।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, ‘জানুয়ারিতে নির্বাচন। এ নির্বাচন বানচালের জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। বিএনপি আন্দোলন করবে বলে ভয় দেখাতে চায় অথচ ১৫ বছরে শেখ হাসিনাকে এক ইঞ্চিও নড়াতে পারেনি।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘২০০৪ সালে যখন শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হলো তখন বিশ্ববিবেক কোথায় ছিলেন? আজ সেই বিশ্ববিবেককেই বলতে চাই, পক্ষপাত করবেন না। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, প্রভুত্ব চাই না।’ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে নানক বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় থাকেনি, ক্ষমতায় যায়নি। জনগণের সমর্থন নিয়েই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আমাদের ভিসানীতির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। উন্নয়ন, অগ্রগতির এগিয়ে যাওয়ার এই পথে যারাই বাধা দেবে আমরা তাদের প্রতিহত করব।’ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের মতো একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের বিরুদ্ধে ভিসানীতি সম্মানজনক ঘটনা নয়। ভিসানীতি অনুযায়ী সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে তার ওপর এটি প্রয়োগ হবে। বিএনপি নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার ঘোষণা দিয়েছে, আমরা দেখতে চাই যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়।’ আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে। শেখ হাসিনা এসবের পরোয়া করেন না। ১৯৭১ সালেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পক্ষে ছিল না, এখনো নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্রোতের বিরুদ্ধে নৌকা বাইতে বাইতে আমরা এখন অভ্যস্ত।’ আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে পারবে না।’ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আবদুর রহমান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল এমপি, ডা. দিলীপ কুমার রায়, কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ, মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শবনম জাহান শীলা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু প্রমুখ।

 

সর্বশেষ খবর