শিরোনাম
রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
২৭ বছর পর দেশে ফিরে লাশ

স্ত্রী সন্তানই টুকরা টুকরা করল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

প্রায় ২৭ বছর নিরুদ্দেশ ছিলেন মো. হাসান। স্ত্রী-সন্তানের মায়ার টানে সম্প্রতি ফিরে আসেন পরিবারে। এ ফিরে আসাটাই তার জন্য কাল হলো। নিজের নামে থাকা সম্পত্তি স্ত্রী-সন্তানের নামে লিখে না দেওয়ায় হত্যার পর টুকরা টুকরা করা হয় হাসানের লাশ। পরে প্রমাণ লোপাট করতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয় লাশের টুকরা। এমন রোমহষর্ক তথ্যই উদঘাটন করল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতার করা হয় নিহতের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে। গতকাল গণমাধ্যমে এ হত্যাকান্ডের কথা জানায় পিবিআই। পিবিআই পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা  বলেন- ১৯ সেপ্টেম্বর আকমল আলী রোড এলাকার জমির ভিলার ছোট ছেলের বাসায় খুন হন হাসান। লাশের কিছু টুকরা ফেলা হয় বোট ক্লাব এলাকায়। অজ্ঞাত হিসেবে লাশ উদ্ধারের পর আঙ্গুলের ছাপ ও সোর্সের মাধ্যমে হাসানের পরিচয় নিশ্চিত হয় পিবিআই। পরে তার ছোট ছেলের বাসার সন্ধান পাওয়া যায়। নাঈমা সুলতানা জানান- আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ বিশ্লেষণ করার পর হত্যাকান্ডের বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হই। পরে হাসানের স্ত্রী ও বড় ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আকমল আলী সড়কের একটি খাল থেকে হাসানের শরীরের একটি অংশ উদ্ধার করা হয়। এখানে মাথা ও শরীরের অন্যান্য অংশ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

পিবিআই পরিদর্শক ইলিয়াছ খান বলেন, নিহত হাসান প্রায় ২৭ বছর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। সম্প্রতি তিনি পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। গ্রামের বাড়ি বাঁশখালীতে হাসানের প্রচুর সম্পত্তি ছিল। এ সম্পত্তিগুলো স্ত্রী সন্তানের নামে লিখে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় স্ত্রী সন্তান মিলে হাসানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন হাসানকে বাসায় ডেকে নেওয়া হয়। বাগ্বিতন্ডার একপর্যায়ে তাকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ট্রলি ব্যাগে করে ৮ টুকরা ফেলা হয় পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাট এলাকায়। মাথা ও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ফেলা হয় যাতে প্রমাণ লোপাট করা যায়। এ ঘটনায় স্ত্রী ও এক সন্তানকে গ্রেফতার করা হয়। আরেক সন্তান ও তার স্ত্রী পলাতক। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে একটি ট্রলিব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। যাতে লাশের ৮টি টুকরা ছিল। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার এসআই আবদুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

সর্বশেষ খবর