শিরোনাম
বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলোচনায় আগামী ভোট

বিদেশি পর্যবেক্ষক হতে লাগবে অভিজ্ঞতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বা উপকরণ শুল্কমুক্তভাবে আনার সুযোগ রেখে বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিদেশিরা বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে চাইলে সুশাসন, নির্বাচন, গণতন্ত্র, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থার ক্ষেত্রে ওই সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধিত হতে হবে। নীতিমালা অনুযায়ী আর সুষ্ঠু নির্বাচন পরিপন্থী কাজ করলে বহিষ্কার করা হবে সংসদীয় আসন থেকে, একই সঙ্গে বাতিলও হতে পারে পর্যবেক্ষণের অনুমতি। গতকাল ইসির জারি করা এই নীতিমালা নির্বাচনের খবর সংগ্রহে বিদেশি সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। অন্যদিকে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে প্রথমে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করা; প্রিসাইডিং কর্মকর্তার আইনি নির্দেশনা অনুসরণ করা; ভোটের গোপন কক্ষে প্রবেশ না করা, ভোট কেন্দ্র থেকে কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার না করার শর্ত রাখা হয়েছে। নীতিমালায় বিদেশি পর্যবেক্ষক বা বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের যোগ্যতা, করণীয়, ভিসা প্রক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নীতিমালায় বেশ কিছু সংশোধনী এনেছে ইসি। এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করে নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছিলেন ইসির কর্মকর্তারা। পরে কমিশন সেই নীতিমালার অনুমোদন দেয়। নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো বিদেশি নাগরিক বা সংস্থা বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে চাইলে তাদের সুশাসন, নির্বাচন, গণতন্ত্র, শান্তিপ্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আর আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থার ক্ষেত্রে ওই সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধিত হতে হবে। আগে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালায় বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য কোনো যোগ্যতার বিষয় সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ ছিল না।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন মেনে চলতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন করার সময় কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণসহ সিভি ও বৈধ পাসপোর্টের কপি জমা দিতে হবে।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ইমেইলের মাধ্যমে বা সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। আবেদন পাওয়ার পর ইসি তা বাছাই করবে এবং ছাড়পত্রের জন্য তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও একটি কপি পাঠানো হবে। সাত দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়পত্রের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর ইসি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে পর্যবেক্ষণের জন্য অ্যাক্রিডিটেশন দেবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ও গাড়ির স্টিকার দেওয়া হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য অস্থায়ীভাবে প্রয়োজনী যন্ত্রপাতি এবং উপকরণ আমদানি বা সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন। এক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শুল্ক অব্যাহতি পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আবেদন করতে হবে। আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব কী হবে তা নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভোটের দিনের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। যদি পর্যবেক্ষণে নির্বাচনে কোনো অনিয়মের ঘটনা দেখা যায় প্রতিবেদনে সেটি ‘হাইলাইট’ করে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ দেওয়া যাবে। পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন পুরোপুরি নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ এবং সঠিকতার দিক থেকে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন হতে হবে। ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকার জন্য একটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা থেকে একজন প্রতিনিধি মনোনীত করতে পারবে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো পর্যবেক্ষক কোনো ধরনের বেআইনি বা দুর্নীতি চর্চার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। পর্যবেক্ষকরা এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না যাতে মনে হয় তিনি কোনো দল বা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনের সময় বা আগে-পরে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো বাধা তৈরি করতে পারবেন না।

 

 

সর্বশেষ খবর