শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, ছাত্রলীগ কর্মী নিহত

রংপুর রণক্ষেত্র ওসিসহ আহত ৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, ছাত্রলীগ কর্মী নিহত

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের সময় রুমন (১৬) নামে এক কিশোর নিহত ও প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ওসমানপুর ইউনিয়নের আজমপুর বাজার এলাকায় ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ৫ অক্টোবর বিএনপির ১৫ দিনের কর্মসূচির মধ্যে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ উপলক্ষে মিরসরাইয়ে একটি পথসভা করার কথা রয়েছে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে গতকাল চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান এ সভার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সভা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে এক কিশোর নিহত হয়েছে। মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম রানা জানান, রুমন ছাত্রলীগের কর্মী। সে স্থানীয় ওসমানপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব গাজী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির প্রস্তুতি সভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওসমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ আলমের নেতৃত্বে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।

এতে আমাদের ১০-১২ জন নেতা-কর্মী আহত হন।’ ওসমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারীরা স্থানীয় আজমপুর বাজারে আমাদের ছাত্রলীগ নেতা হাসান ও তার কয়েক সহযোদ্ধার ওপর হামলা চালায়। এতে হাসপাতালে রুমন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছে এবং পাঁচজন আহত হয়েছে।’

রংপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে রণক্ষেত্র, থানার ওসিসহ ৪০ জন আহত : রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। এতে ১০ পুলিশসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। ২০ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান রয়েছেন। গতকাল বিকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি শান্ত করা হচ্ছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান এমপির পক্ষ উপজেলা পরিষদ গেটের সঙ্গে অডিটোরিয়ামে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকারের পক্ষ রংপুর-ঢাকা চার লেন মহাসড়কে ওভার ব্রিজের নিচে একই সময়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ মিছিল নিয়ে সভাস্থলে যাচ্ছিল।

উপজেলা পরিষদ গেট অতিক্রম করার সময় অন্য পক্ষের (এমপি পক্ষ) নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় শত শত নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। উপজেলা সদরের জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়। আতঙ্কে লোকজন দিগি¦দিক ছোটাছুটি করতে থাকে।

দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় পুলিশসহ কমপক্ষে ৫০ জন নেতা-কর্মী এবং পথচারী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে শাহিদ হাসান প্রিন্স (২৮), মমিনুল ইসলাম নাজমুল (২০), নাইম (২৪), আ. রউফ (৭০), নাজমুল (২৬), রাদ মিয়া (১৮), নুরুজ্জামান (২৮), শাহনাজ (৩০), সুবর্ণা (২৫) ও ফজিলা বেগমের (৩০) অবস্থা গুরুতর। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানসহ ১০ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে, পুরো উপজেলা পরিষদ ও মহাসড়ক এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করে।

মিঠাপুকুর থানার ওসিকে ফোন দেওয়া হলে এসআই মুহিবুর রহমান বলেন, ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষে ওসি স্যারসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কেউ অভিযোগ দেয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

সর্বশেষ খবর