রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট সংঘটিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে করা মামলায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। অভিযোগপত্রে নতুন করে মোহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদ নামে একজনের নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন করা হয়েছে। তিনি মামলার বাদী সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক।

তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মুজাহিদ আজমি তান্না মারা যাওয়ায় তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।  অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আসামিদের অপরাধের সত্যতা প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। আগামী ৪ অক্টোবর মামলার তারিখ ধার্য রয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে সভাপতি) নাইমুল হাসান, একই থানার তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর আমজাদ হোসেন, ফিরোজ মাহমুদ, মো. সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম খান কাজল, সিয়াম ও অলি আহমেদ ওরফে জনি। এতে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট রাতে ড. বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মো. আবদুর রউফ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সেই অভিযোগপত্রে ছাত্রলীগ নেতাসহ নয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪ আগস্ট রাতে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডের বাসায় নৈশভোজে অংশ নিতে যান ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। অনুষ্ঠানে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিএনপি নেতা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম উপস্থিত ছিলেন। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ তুলে বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। নৈশভোজ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তারা মার্শা বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। সেই অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে ২০২২ সালের ১ মার্চ ৯ আসামির বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। ২৮ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে পাঁচজন সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষীতে ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির জড়িত থাকার কথা উঠে আসে। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেন ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবিকে নির্দেশ দেন। ডিবির সহকারী পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার নিচে নন, এমন একজন মামলাটির অধিকতর তদন্ত করবেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।