শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সুষ্ঠু ভোটে ফের জোর যুক্তরাষ্ট্রের

ওয়াশিংটনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর - বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় : মোমেন

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, সে বিষয়ে আবারও জোর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগবিষয়ক সমন্বয়কারী জন কারবির বক্তব্যে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নয়াদিল্লিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাক্ষাৎ এবং ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে করা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে জন কারবি এ তথ্য জানান।

হোয়াইট হাউস থেকে প্রচারিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্রান্সক্রিপ্ট অনুসারে, সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গ জানতে চান এক সাংবাদিক। উত্তরে জন কারবি ভারতের ও কানাডার প্রসঙ্গই বলেন, বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি। পরে জন কারবির কাছে নয়াদিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন কেমন দেখছেন প্রশ্ন করা হয়। এর উত্তরে জন কারবি বলেন, ‘তাঁরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের গুরুত্বের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়ন নিয়েও তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’ জানা যায়, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অধিবেশন শেষে প্রধানমন্ত্রী যান ওয়াশিংটনে। ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

গত মাসে নয়াদিল্লিতে জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে বাইডেন, শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ সেলফি তোলেন। তখন তাদের মধ্যে কিছু কথাবার্তা হয়েছিল বলেও সে সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। প্রায় তিন সপ্তাহ পর হোয়াইট হাউসও এ বিষয়ে মুখ খুলল। নয়াদিল্লির পর গত মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আয়োজিত নৈশভোজেও সাক্ষাৎ হয়েছিল শেখ হাসিনা-বাইডেনের।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়-পররাষ্ট্রমন্ত্রী:

বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একই অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি যে, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। যুক্তরাষ্ট্রও চায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সে লক্ষ্যে তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আর যারা নির্বাচনে অংশ নেবে না তাদের পাশে যুক্তরাষ্ট্র নেই।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদেশিরা আসছেন এবং আগের চেয়ে বেশি যোগাযোগ রাখছেন। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশ এখানে নিজেদের পণ্য রপ্তানি করতে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, বাংলাদেশেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো ভিসানীতি রয়েছে এবং এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। যারা বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে, তাদের ওপরও বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে এবং দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তন, নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন, রোহিঙ্গা সংকট ও নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নত বিশ্বের জন্য বহুপাক্ষিকতার ওপর জোর দেয়। এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা শক্তিশালী করেছেন। জনগণ ভোট দিলে তা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও আস্থা আছে।’

সর্বশেষ খবর