রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আইন হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা

সতর্কতা ঢাকার নিরাপত্তায়

সাখাওয়াত কাওসার

বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিয়ে আরও সতর্ক তারা। দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রস্তুতি আরও ঝালাই করে নিচ্ছে র‌্যাব-পুলিশ। তাদের সহযোগী হিসেবে মাঠে থাকবে আনসার সদস্যরা। এরই মধ্যে পুলিশ সদর দফতর থেকে সবগুলো ইউনিটে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশি-বিদেশি চক্রের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণ নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাজধানীতে ২ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগই নেবে টিম ডিএমপি। কারণ জনগণের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইন অনুযায়ী তাদের প্রতিহত করা হবে। একাধিক সূত্র বলছে, সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ের দিকেই যাচ্ছে বিএনপি। প্রকাশ্যে তাদের সঙ্গে মাঠে না থাকলেও সব ধরনের সহায়তা করে যাচ্ছে জামায়াত। ঢাকাকে ঘিরেই যত সব পরিকল্পনা তাদের। তবে আগামী ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত পূজা চলাকালে বড় কোনো কর্মসূচি রাখবে না দলগুলো। আগামী ১৮ অক্টোবর বিএনপি তাদের কর্মসূচি রূপরেখা ঘোষণা করবে। এর আগেই পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর স্মারকলিপি দেবে তারা। ইতোমধ্যে গ্রেফতার, মামলা ও হামলা এড়াতে এ মাসে তৃণমূলের একাংশকে ঢাকায় অবস্থান করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া অল্প সময়ের নোটিসে কর্মসূচি পালনে ঢাকায় চলে আসার বিষয়ে আশপাশের জেলা নেতাদের প্রতি নির্দেশনা রয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের উপ-মহাপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখন আমরা পূজার নিরাপত্তা নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছি। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ইতোমধ্যে মহানগর, রেঞ্জ, জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। এর আগে পূজার নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়েছে। এর বাইরে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সবকিছুই করব এবং তা আইন অনুযায়ী।  গোয়েন্দারা বলছেন, বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে ব্যবহার করে নাশকতার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা কুচক্রী মহল। এসব বিষয় প্রতিহত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে একাধিক প্রতিবেদন দিয়েছে সংস্থাগুলো। তবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরের সময়গুলো নিয়েই বিশেষ পরিকল্পনায় দফায় দফায় বসছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। সবকিছু আমলে নিয়েই সরকার পুলিশ প্রশাসনকে প্রস্তুত করছে। ইতোমধ্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। কিছু জায়গায় পদায়নও করা হয়েছে। নতুন পদায়ন করা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। নির্বাচনে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা যারা যোগ্য মূলত তাদেরই বাছাই করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতর।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শুধু দুর্গাপূজা নয়, জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি সব সময়েই আমাদের কাছে মুখ্য বিষয়। ইতোমধ্যে আমরা দেশব্যাপী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। বাড়ানো হয়েছে রোবাস্ট প্যাট্রল। সাইবার ওয়ার্ল্ডে আমাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং চলছে। যারা ইস্যু তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করবে, জনজীবন বিপন্নের চেষ্টা করবে তাদের শনাক্ত করে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে অতিমাত্রায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ডিএমপির সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের ছুটি না দেওয়ার বিষয়ে ভাবছেন ডিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তারা। শিগগিরই এ সংক্রান্ত নির্দেশনা আসতে পারে। এর বাইরে বিএনপির থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে জ্বালাও-পোড়াওর অভিযোগে মামলা রয়েছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা হতে পারে। সব মিলিয়ে ওই দিন সহিংসতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর