সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণ নিয়ে আবারও উদ্বেগ আইএমএফের

নিজস্ব প্রতিবেদক

খেলাপি ঋণ নিয়ে আবারও আইএমএফ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শর্ত পরিপালন পরিস্থিতিতেও প্রকাশ করেছে অসন্তোষ। ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কোনোভাবেই কমাতে পারছে না সরকার, উল্টো আরও বাড়ছে। জুন শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ রেকর্ড ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা এই খাতের মোট ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। অথচ ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচির শুরুতে কথা ছিল অক্টোবর শেষে খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। তা করতে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংকগুলো। ৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে খেলাপি ঋণ নিয়ে আবারও উদ্বেগ জানিয়েছে আইএমএফ। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছে প্রতিনিধি দলটি।

ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করতে না পারলে খেলাপি ঋণ কমবে না। এজন্য খেলাপি ঋণ কমাতে সব রকম অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের তাগিদ দেওয়া হয়। অন্যথায় ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। অবশ্য এ নিয়ে ইতোমধ্যে এক ধরনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গতকাল ব্যাংক খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে একটি মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনী দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। খেলাপি ঋণ পরিস্থিতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। পরে এ বৈঠকের বিষয় ও অগ্রগতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিভাগের সচিব। জানা গেছে, আইএমএফ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতির সূচকগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ বিভাগের কাছে এ সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্যও চেয়েছে। মিশন এমন সময় সফর করছে যখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি ও রিজার্ভে এক ধরনের বিরূপ প্রভাব বিরাজ করছে। বেড়েছে খেলাপি ঋণের হারও। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪.৩১ বিলিয়ন ডলার, যা গত পাঁচ মাসে সর্বনিম্ন। সেপ্টেম্বরে ১.৩৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত তিন মাসে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। এসব বিষয়ে আইএমএফ আগে থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল। গতকাল আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করে অসন্তোষ জানিয়েছে।

সূত্র মতে, আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করার আগে তাদের দেওয়া শর্ত ও সংস্কার কর্মসূচি পর্যালোচনার জন্য প্রতিনিধি দলটি ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবে এবং শর্ত পরিপালন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে। এরপর তারা একটি প্রতিবেদন দেবে। সেই প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পাবে কি না। এ প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির এশীয় অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দ।

সর্বশেষ খবর