সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিচার বিভাগ যেন রাজনীতিকরণ না হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিচার বিভাগ যেন রাজনীতিকরণ না হয়

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘আমি চাইব বিচার বিভাগ ও বিচারালয়কে যেন কোনোভাবে রাজনীতিকরণ করা না হয়।’ গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ১ নম্বর এজলাসে (প্রধান বিচারপতির এজলাস) অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি দুর্নীতিমুক্ত বিচারব্যবস্থা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন। সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের বিচারব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে এবং সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে একটি দীর্ঘমেয়াদি জুডিশিয়াল প্ল্যান তৈরি করতে চাই।

দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে গত ২৬ সেপ্টেম্বর শপথ নেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ওই সময় সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ চলছিল। অবকাশ শেষে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট খোলার প্রথম দিনে রীতি অনুসারে প্রধান বিচারপতিকে বিচারকক্ষে সংবর্ধনা জানানো হয় অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে। সংবর্ধনায় প্রথমে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রধান বিচারপতির কর্মময় জীবন নিয়ে বক্তব্য দেন। পরে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, প্রধান বিচারপতির পরিবারের সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা অনুষ্ঠান বর্জন করে আদালতের বাইরে ইউনাইটেড ল’ ইয়ার্স ফ্রন্টের ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, এখানে বিচারক ও আইনজীবীদের সম্মিলিত এবং মেধাপুষ্ট দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই কেবল সুবিচারের লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে; তবেই বিচার বিভাগের মর্যাদা অক্ষুণœ থাকবে। আমাদের সুপ্রিম কোর্টের এই বিচার অঙ্গন পারস্পরিক সহনশীলতা, সহমর্মিতা ও ভালোবাসায় আলোকিত হোক, এটিই আমার প্রত্যাশা। তিনি বলেন, একটি কথা একটু অপ্রিয় হলেও বলতে চাই, কোনো বিষয়ে ভালোভাবে না জেনে বা যথেচ্ছভাবে বিচারক ও আদালত সম্পর্কে কটু মন্তব্য মোটেই সভ্যতার ইঙ্গিত বহন করে না। বিচারকের রায়ের সমালোচনা করার অধিকার বাকস্বাধীনতার একটি অংশ বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে সংবিধানে এই বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে। তবে কেউ যদি স্বাধীনতার অপব্যবহার করে, তা সংবাদমাধ্যমই হোক, আইনজীবীই হোক বা যে কেউ হোক, তাকে শায়েস্তা করার জন্য আদালতের হাত যথেষ্টই লম্বা।’ সংবাদপত্র দেশের সমাজব্যবস্থার প্রতিবিম্ব বলে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

সর্বশেষ খবর