বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফের সিসিইউতে খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে সপ্তম তলার কেবিন ৭২০১ থেকে চতুর্থ তলার সিসিইউ ৪২১৯ নম্বর কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন এবং পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান সিঁথি উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে কয়েক ঘণ্টার জন্য কেবিন থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে তাঁর প্রাণনাশের ঝুঁকি কাটেনি। লিভারের জটিলতা বেড়েছে। চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ম্যাডামের’ শারীরিক অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। এখনো ঝুঁকি কাটেনি। তাঁর একমাত্র চিকিৎসা এখন বিদেশের ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যাডভান্স হেলথ সেন্টারে’। এখানে তাঁকে শুধুমাত্র বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। ডা. জাহিদ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতার জন্য সর্বস্তরের মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়াকে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে (২৪ ঘণ্টা) সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর পেটে ও বুকে পানি জমেছে। সেই পানি কমানোর চেষ্টা চলছে। লিভার জীবাণু আক্রান্ত হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তাঁকে আর বাসায় নেওয়ার মতো অবস্থা নেই। তাকে এখন উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হচ্ছে। অথচ এই অ্যান্টিবায়োটিকও এখন মাঝেমধ্যেই কাজ করছে না। তিনি মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সমন্বয়ক প্রফেসর ডা. এফ এম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, লিভারের সংক্রমণের কারণে বেগম খালেদা জিয়ার পেটে বারবার পানি চলে আসছে। উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকেও এখন তেমন কাজ হচ্ছে না। পেট থেকে পানি একেবারে হৃদযন্ত্র পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। এ জন্য ইতোমধ্যে তাকে দুবার সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে। বেগম জিয়ার শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হওয়ায় এ পর্যন্ত আট ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। এখানে চিকিৎসকদের হাতে আর কিছুই করার অবশিষ্ট নেই। এখন উন্নত চিকিৎসাই একমাত্র ভরসা। অথচ দুই বছর আগে টিপস পদ্ধতিতে চিকিৎসা হলে বেগম জিয়ার পেটে ও হৃদযন্ত্রে রক্তক্ষরণ হতো না। তাঁর অবস্থাও এত আশঙ্কাজনক হতো না। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে টিপস ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট (প্রতিস্থাপন) হয় না। ২০০৬ ও ২০০৮ সালে ৃবারডেমে পরীক্ষামূলকভাবে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট চালু হলেও সেটি সফল না হওয়ায় অব্যাহত রাখা যায়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন আগে পরীক্ষামূলক চালু হয়েও একই কারণে আবার বন্ধ হয়ে গেছে।

সর্বশেষ খবর