রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডিসি-এসপিদের কাছে সুষ্ঠু ভোট উপহার চায় ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিভাগীয় কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের কাছে সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন উপহার চাইলেন নির্বাচন কমিশনাররা। যে কোনো মূল্যে সুষ্ঠু ভোটের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা। গতকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত চার বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে এ নির্দেশনা দেন তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এস আসাদুজ্জামান।

প্রশাসন ও পুলিশের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে আপনারাই হচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের মাঠপর্যায়ের বিশ্বস্ত সহায়তাকারী এবং আপনারাই আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আমাদের শপথ নেওয়ার পর সহস্রাধিক নির্বাচনে শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে আন্তরিকতার সঙ্গে রিটার্নিং অফিসারকে সহযোগিতা করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিটি নির্বাচন কোনো প্রকার সহিংসতা ছাড়াই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সব সময়ই বলি জ্ঞানই শক্তি। জ্ঞানকে বৃদ্ধি করতে হলে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আপনাদের অনেকেরই নির্বাচন পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা আছে। আবার কারও কারও নেই। আমি আশা করি এই প্রশিক্ষণের পর সবাই সমানভাবে আত্মবিশ্বাসী হবেন এবং একটা সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবেন। তিনি বলেন, অতীত নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করা আমি পছন্দ করি না। তবে অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে চলুন আমরা সবাই মিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের এমন উদাহরণ সৃষ্টি করি, যা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে যাতে কাজ করতে পারেন এ জন্যই প্রশিক্ষণ জরুরি মনে করেছি। আমরা সবাই জানি যতই আইন জানি না করি যেন, যেহেতু পাঁচ বছর পরপর ভোট হয়। তাই প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। দুই দিনের কোর্সে আইনগুলো সম্পর্কে ধারণা নেবেন। তাই এটি ধারণ করে, লালন করে মাঠে প্রয়োগ করবেন। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আপনারা জীবনে কোনো না কোনো সময় নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর পুলিশের যারা আছেন, তাদের তো চাকরিজীবনের শুরু থেকেই এ দায়িত্ব পালন করতে হয়। আমাদের যে বাধ্যবাধকতা আছে সংসদ শেষ হওয়ার পূর্বের তিন মাস অর্থাৎ ১ নভেম্বর থেকে আগামী বছরে ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে হবে, যদি না কিছু ব্যতিক্রম সংবিধানে যেটা আছে, সেগুলো না ঘটে। তিনি বলেন, বর্তমানে আইনে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। কিছু কনফিউশন থাকলে জেনে নেবেন। রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার কাদের করা হবে এখনো ঠিক হয়নি। এটা তফসিল ঘোষণা যখন, তখনই কেবল জানা যাবে। কিন্তু দায়িত্ব পালন সবাইকেই করতে হবে। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, এবারই প্রথম প্রশিক্ষণ হচ্ছে। আগে শুধু বিভাগীয় পর্যায়ে ব্রিফিং দেওয়া হতো। অনেকেই হয়তো রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাননি, তাই এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। প্রত্যেকেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে দক্ষ। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে হয়, এ জন্য আপনারা সহযোগিতা করবেন। কেননা আমরা শুধু আমাদের দেখছি না, বহির্বিশ্বও দেখছে। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকেরই শপথ নিয়ে নামতে হবে, যে আমি আমার দায়িত্বটা সুষ্ঠু সুন্দরভাবে পালন করব। সেক্ষেত্রে হয়তো বাধা আসতে পারে, তা অতিক্রম করার জন্য ডিসি, এসপিদের স্ব স্ব উদ্যোগে সমাধান করতে হবে। নভেম্বরের কোনো একসময় তফসিল হবে। আশা করি আপনারা সুষ্ঠু, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দেবেন। দুই দিনের আবাসিক এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ১১৭ জন মাঠ প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ইসি কর্মকর্তা অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর