বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের রোডম্যাপ চূড়ান্ত

গোলাম রাব্বানী

ভোটের রোডম্যাপ চূড়ান্ত

আড়াই মাসের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পয়লা নভেম্বর শুরু হবে নির্বাচনি দিন গণনা। নির্বাচনের সব প্রক্রিয়া শেষ করার টার্গেট মধ্য জানুয়ারি। তবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন শেষ করার। রোডম্যাপে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট গ্রহণ এবং ফলাফলের গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত ৯৪টি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হয়েছে। কর্মপরিকল্পনা তথা রোডম্যাপে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পাঁচটি কাজ শেষ করেই তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে ভোট গ্রহণের সম্ভব্য সূচি রাখা হয়েছে।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ডিসেম্বরের শেষ দিকে অথবা জানুয়ারির প্রথম দিকে হতে পারে। এ জন্য নভেম্বরের শুরু বা মাঝামাঝিতে তফসিল দেবে কমিশন।

সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের মনোনয়নপত্র, জামানতের অর্থ প্রদানের রসিদ, মনোনয়নপত্র দাখিল-বাছাই সংক্রান্ত ফরম নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বিজি প্রেস থেকে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করা হবে। এর পরে নির্বাচনের আগাম প্রচারের পোস্টার-ব্যানারসহ সবকিছু অপসারণে আদেশ জারি করা হবে। এর পরপরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে।

অন্যদিকে নির্বাচনের তফসিল তথা সময়সূচি জারির পরের দিন রাজনৈতিক দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদধারীর কার স্বাক্ষরে মনোনয়ন দেওয়া হবে, এ সংক্রান্ত তথ্য দিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দেবে ইসি। মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ হওয়ার দুই দিন আগেই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করবে ইসি। এ ছাড়া একাধিক রাজনৈতিক দল যৌথভাবে প্রতীক বরাদ্দে ইচ্ছুক হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের আবেদন করার সুযোগ দিতে চিঠি দেবে ইসি। তফসিল ঘোষণার দুই দিন পরই ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করা হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এক সপ্তাহ পরে নির্বাচনি কাজে রিটার্নিং অফিসারসহ মাঠ পর্যায়ের ব্যয় বহনের জন্য প্রথম ধাপের অর্থ বরাদ্দ ও মঞ্জুরি দেবে কমিশন। প্রার্র্থিতা প্রত্যাহারের একদিন পরই নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসে মূদ্রণাদেশ দেবে ইসি সচিবালয়। এ ছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা তথা ডিসি-এসপিসহ অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বৈঠক করবে ইসি। ভোট গ্রহণের ২০ দিন আগে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে; ১৫ দিন আগে ভোট কেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ হবে; ভোট গ্রহণের ১২ দিন আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেবে ইসি। এদিকে এবার ভোট গ্রহণের ১১ দিন আগেই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। ভোটের ১০ দিন আগে পোস্টাল ব্যালট পেপার দেওয়া হবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে। ভোটের ১০/১২ দিন আগে শুরু হবে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের কাজ। এবারের নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতা ঠেকাতে ভোট গ্রহণের পরেও ১৫ দিন মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রাখার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে ইসি। ভোট গ্রহণের ৮/৯ দিন আগেই ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য নির্বাচনি সামগ্রী জেলা সদরে পাঠানো হবে। এ ছাড়া ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার দুই দিন পর ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে তা সংসদ সচিবালয়ে পাঠাবে ইসি। ইসির কর্মপরিকল্পনায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচি রাখা হয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষেই এ নির্দেশনা দেবে নির্বাচন কমিশন।  এ বিষয়ে একাধিক নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সংঘাত-সহিংসতার কথা চিন্তা করেই এবার নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেও ১৫ দিন মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন সাপেক্ষে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।

সর্বশেষ খবর