বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বরগুনার সাবেক ডিসির অন্তরঙ্গ ভিডিওতে তোলপাড়

খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

বরগুনার সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) হাবিবুর রহমানের নারীসঙ্গ বিষয়ক অন্তরঙ্গ অবস্থার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় বরগুনাসহ সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিছানায় শুয়ে ডিসির সঙ্গে গল্প করছেন ওই নারী। এ সময় ডিসির কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকা দামের ফোন তিনি উপহার হিসেবে পাওয়ার কথা বলেন। ২২ ব্যাচের ওই কর্মকর্তা সম্প্রতি  যুগ্মসচিব পদে উন্নীত হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা শাখায় কর্মরত। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই ভিডিওর ব্যাপারটিকে গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়েছে। মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা চলছে। গতকাল এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাবেক ওই ডিসির বিষয়টি নিয়ে কথা বলব আমরা। ডিজিটালাইজেশনের যুগে অনেক রকম বিষয় থাকে। তাই বিষয়টি আমরা যাচাইবাছাই করব। দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে ডিসির কোনো ব্যত্যয় বা চারিত্রিক স্খলন হয়েছে কি না আমরা অবশ্যই দেখব। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এর আগেও জামালপুরের ঘটনায় নজির কিন্তু আছে সুতরাং এটাও অবশ্যই আমলে নেব। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, সাবেক ডিসি হাবিবুর রহমানের আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ঘটনা সত্যি হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভিডিওর ব্যাপারে বরগুনার সাবেক জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাবিবুর রহমান বরগুনার ডিসি পদে যোগ দেন, চলতি বছরের ৯ জুলাই তাকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব করা হয়। প্রকাশিত ভিডিওতে সাবেক জেলা প্রশাসক ও এক নারী একটি কক্ষে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ও উভয়ের কিছু কথোপকথন রয়েছে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান ডিসি থাকার সময় ভিডিওতে থাকা ওই নারী প্রায়ই ডিসির বাংলোয় রাতযাপন করতেন। ডিসি তার অফিসে নিয়ে স্টাফদের পরিচয় করিয়ে দিতেন যে ওই নারী তার বান্ধবী। বিমানে, স্পিডবোটে একত্রে ভ্রমণ করতেন তারা। বরগুনার ডিসি অফিসের বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ওই নারীর স্বামী ছিলেন একজন পাইলট। তার একটি বিবাহিত মেয়ে রয়েছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর ডিসির সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়। ডিসি তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছেন। নারী ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় বসবাস করলেও সঙ্গীর অভাব ছিল। মেয়ে বিয়ে দেওয়ার পর ডিসির সঙ্গে সংসার শুরু করতে চেয়েছিলেন বলেও জানা গেছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের শেষের দিকে জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবির তার এক অফিস সহায়ক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় খুব সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরে তাকে জেলা প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ করা হয়। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর