শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সাড়ে ৩ লাখ ব্যালট বাক্স প্রস্তুত

আগামী সপ্তাহে যাবে নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে, জেলায় জেলায় যাবে দুই ধরনের ব্যাগ ও গালা

গোলাম রাব্বানী

সাড়ে ৩ লাখ ব্যালট বাক্স প্রস্তুত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ব্যালট বাক্স প্রস্তুত। আগামী সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক অফিসে যাবে ব্যালট বাক্স। আর জেলায় জেলায় যাবে দুই ধরনের ব্যাগ ও গালা। এ ছাড়া প্রার্র্থিতা প্রত্যাহার শেষ হওয়ার এক দিন পরে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ শুরু হবে। ভোট গ্রহণের ৮-৯ দিন আগেই ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য নির্বাচনি সামগ্রী জেলা সদরে পাঠানো হবে।

এদিকে জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আড়াই মাসের রোডম্যাপ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট গ্রহণ এবং ফলাফলের গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত ৯৪টি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হয়েছে। কর্মপরিকল্পনা তথা রোডম্যাপে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পাঁচটি কাজ শেষ করেই তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে ভোট গ্রহণের সম্ভব সূচি রাখা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতা ঠেকাতে নির্বাচনের ভোট গ্রহণের পরেও ১৫ দিন মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রাখার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে ইসি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ডিসেম্বরের শেষ দিকে অথবা জানুয়ারির প্রথম দিকে হতে পারে। এ জন্য নভেম্বরের শুরুতে বা মাঝামাঝিতে তফসিল দেবে কমিশন। ইসির কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে- নির্বাচনি এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে নির্বাচনের পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখার লক্ষ্যে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় পুলিশ বা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষেই এ নির্দেশনা দেবে কমিশন। সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের মনোনয়নপত্র, জামানতের অর্থ প্রদানের রসিদ, মনোনয়নপত্র দাখিল-বাছাই সংক্রান্ত ফরম নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বিজি প্রেস থেকে মাঠপর্যায়ে বিতরণ করা হবে। এর পরে নির্বাচনের আগাম প্রচারের পোস্টার-ব্যানারসহ সবকিছু অপসারণে আদেশ জারি করা হবে। এর পরপরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের এক দিন পরই নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসে মূদ্রণাদেশ দেবে ইসি সচিবালয়। এ ছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা তথা ডিসি-এসপিসহ অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে ‘আইনশৃঙ্খলা’ বৈঠক করবে ইসি। ভোট গ্রহণের ২০ দিন আগে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে; ১৫ দিন আগে ভোট কেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ হবে; ভোট গ্রহণের ১২ দিন আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেবে ইসি। এদিকে এবার ভোট গ্রহণের ১১ দিন আগেই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। ভোটের ১০ দিন আগে পোস্টাল ব্যালট পেপার দেওয়া হবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে। ভোটের ১০/১২ দিন আগে শুরু হবে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কাজ। 

অন্যদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১০টি আঞ্চলিক পর্যায়ে নির্বাচনি উপকরণ পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি বলেন, ব্যালট বাক্স, ব্যাগ ও গালা পাঠানোর মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, বিএসটিআই রিপোর্ট এখনো এসে পৌঁছায়নি। রিপোর্টটা তৈরি হয়েছে শুনেছি। বিএসটিআই রিপোর্ট পেলে বিতরণ হবে। শুরুতে ঢাকা অঞ্চলে আমরা পাঠাব। প্রথম লটে ৪০ হাজার বাক্স পেয়েছি। মোট ৮০ হাজার বাক্স এবার কিনেছি। এর মধ্যে ৪০ হাজার সাপ্লাই পেয়েছি। এখান থেকে বিতরণ শুরু করছি। তিনি বলেন, এবার আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিটি নির্বাচনি সামগ্রী পাওয়ার পর আবার টেস্টে দেওয়া হবে। এ টেস্টে আমরা যদি সন্তুষ্ট হই তাহলে সেটি মাঠপর্যায়ে পাঠাব। আগে টেস্ট যেহেতু বিএসটিআই করেছে, এবারও বিএসটিআই করবে। শুধু ব্যালট বাক্স। অন্য সামগ্রী সামনের সপ্তাহ থেকে যাওয়া শুরু করবে। তিনি বলেন, অন্যবারের মতো এবারও আমরা নির্বাচনি সামগ্রী পাঠানোর সময় পুলিশের কাছে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেব। তিনি বলেন, এবার ৩ লাখের ওপর ব্যালট বাক্স লাগবে। পুরনো ব্যালট বাক্স রয়েছে ২ লাখ ৬৭ হাজার। আমরা ৮০ হাজার কিনেছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, আমাদের নির্বাচনি অঞ্চল হলো ১০টি। আটটি প্রশাসনিক বিভাগ ও ফরিদপুর এবং কুমিল্লা। আমরা এটাকে অঞ্চল হিসেবে ধরি। ব্যালট বাক্সগুলো অঞ্চলে যাচ্ছে। অন্যান্য মালামাল সরাসরি জেলায় যাবে।

সর্বশেষ খবর