রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নজর ডু অর ডাই ম্যাচে

একদিকে আরব সাগর, অন্যদিকে ‘গেটওয়ে অব ইন্ডিয়া’। ঠিক পেছনে আজাদ ময়দান। সামনে মাথা উঁচু করে ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে আছেন ছত্রপতি শিবাজি। ঐতিহাসিক তাজমহল প্যালেস হোটেলকে ঘিরে রেখেছে আরব সাগর, ইন্ডিয়া গেট, শিবাজির মনুমেন্ট ও আজাদ ময়দান। এসব ছাড়াও বহু দর্শনীয় স্থান আছে ভারতের ‘বাণিজ্যিক নগরী’ মুম্বাইয়ে। এর মধ্যে বান্দ্রা অন্যতম। বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান, সালমান খান, অজয় দেবগনের বাড়ি জুহু বিচের বান্দ্রাতে। আজাদ ময়দানে খেলে বড় হয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার, বিনোদ কাম্বলি, রোহিত শর্মারা। কিন্তু দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের মূল আকর্ষণ অনিন্দ্য সুন্দর তাজমহল প্যালেস হোটেল। সাগর তীরবর্তী কোলাবা অঞ্চলে এটি অবস্থিত। মুম্বাই ঘুরতে এলে পর্যটকদের সবাই আসেন হোটেলটি দেখতে। ফেরার সময় স্মৃতির ফ্রেমকে সমৃদ্ধ করতে তুলে নিয়ে যান অসংখ্য ছবি। ২৬ নভেম্বর, ২০০৮ সালের জঙ্গি আক্রমণের পর বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় হোটেলটিকে নি-িদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলতে এই তাজমহল হোটেলে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এখানে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডও। দুই দল গতকাল ম্যাচও খেলেছে ওয়াংখেড়ে।

আফগানিস্তানের সঙ্গে জয়ের পর উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ হেরেছে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও ভারতের কাছে। টানা তিন ম্যাচ হারের ক্লান্তি জুড়াতে গত দুই দিন বিশ্রাম ছিল ক্রিকেটারদের। সাকিব বাহিনীর কেউই চামড়া পোড়া গরমে হোটেলের নিরাপত্তা বেষ্টনী টপকে বাইরে বেরোননি। জিম করে, সাঁতার কেটে দিন পার করেছেন। ২৪ অক্টোবর প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। সেমিফাইনালে খেলতে বিশ্বকাপের এই ম্যাচটি জেতা খুবই জরুরি সাকিব বাহিনীর। শুধু এই জয় নয়, বাকি ম্যাচগুলোও জিততে হবে টাইগারদের।

তাজমহল প্যালেস অপরূপ কারুকার্যখচিত একটি দৃষ্টিনন্দন বিল্ডিং। প্রায় সোয়া শ বছরের পুরনো। ১৯০৩ সালে ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে রতন টাটা হোটেলটি উন্মুক্ত করেন। কোনোরকমের ঝামেলা ছাড়া শত বছর পুরনো হোটেলটি ভালোই চলছিল। কিন্তু ২০০৮ সালে হঠাৎ করে জঙ্গি আক্রমণে হোটেলের মূল ভবনের ছাদ ধ্বংস হয়ে যায়। জঙ্গি আক্রমণে মারা যায় ১৭৫ জন নিরীহ মানুষ। যদিও ভারতীয় সেনাবাহিনী চার জঙ্গির তিনজনকে হত্যা করে পাল্টা আক্রমণে এবং একজনকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে কাসাফ নামের ওই জঙ্গির ফাঁসি হয়। জঙ্গি হামলার পরপরই হোটেলের নিরাপত্তা বাড়ানো হয় হাজারগুণ। অসাধারণ সুন্দর হোটেলটির মূল ভবন সাততলা। মূল গম্বুজ ছাড়া ছোট-বড় মিলিয়ে রয়েছে আরও ৫টি গম্বুজ। ন্যক্কারজনক ঘটনার পর মূল ভবনের পাশে ২২ তলা আরও একটি বিল্ডিং করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। 

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম কিংবা কলকাতার ইডেন গার্ডেন, অথবা চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের মতো বড় নয় ওয়াংখেড়। ১৯৭৪ সালে স্থাপিত স্টেডিয়ামটির আসন সংখ্যা ৩২ হাজার। মাঠটিতে এই প্রথম খেলবে বাংলাদেশ। ২০১১ সালে ভারত সর্বশেষ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ওই ফাইনালটি হয়েছিল ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে। দিবারাত্রির ফাইনালে মাহেলা জয়াবর্ধনের সেঞ্চুরিকে ম্লান করে ভারতকে শিরোপা উৎসবে মাতিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলিরা। এই মাঠে খেলে সাকিব বাহিনী নিশ্চিত করেই নিজেদের ক্রিকেট কারিয়ারকে সমৃদ্ধ করবে। তবে এই মাঠে আইপিএল ম্যাচ খেলেছেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে কি খেলবেন সাকিব?

সর্বশেষ খবর