মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংসদে বিল

আটক তল্লাশি জব্দের ক্ষমতা পাচ্ছে আনসার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যদের হাতে অপরাধী আটক, দেহতল্লাশি ও মালামাল জব্দের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে এ বাহিনীতে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল ২০২৩’ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে।

গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিলটি সংসদে উপস্থাপন করলে তা তিন দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম বিলটি উপস্থাপনে আপত্তি করেন। তিনি বলেন, পুলিশের সমান্তরাল ক্ষমতা আনসার বাহিনীকে দেওয়া হলে দুটি বাহিনীর মুখোমুখি অবস্থান হয়ে যেতে পারে এবং তিনি বিলটি প্রত্যাহারের দাবি করেন। তবে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সামনে নির্বাচন। এতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করতে হলে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যদেরও মোতায়েন করতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর এটি ভোটে দিলে ফখরুল ইমামের দাবি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এদিকে চলতি অধিবেশনেই বিলটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন ২ নভেম্বর শেষ হবে। সংসদে প্রস্তাবিত বিলের ৮ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্রমত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহতল্লাশি, কোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।’ এ বিলের ২১ ধারায় ‘বিদ্রোহ সংঘটন বা বিদ্রোহ সংঘটনের প্ররোচনায়’ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড রাখা হয়েছে। অপরাধ বিচারের জন্য সংক্ষিপ্ত আনসার আদালত এবং বিশেষ আনসার আদালত নামে দুটি আদালত গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি বা ব্যাটালিয়ন সদস্যের সম্পত্তি চুরি করা, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে প্যারেডে অনুপস্থিত থাকা, কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রদর্শন অপরাধ হিসেবে গণ্য করে চাকরি থেকে বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অপসারণের শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এদিকে প্রস্তাবিত বিলটি উত্থাপনে আপত্তি জানিয়ে ফখরুল ইমাম আরও বলেন, কথায় আছে, ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’। এখানে বাঁশের চেয়ে কঞ্চি শক্ত হয়ে গেছে। পুলিশের কাজটা যদি বিভক্ত এবং সমান্তরাল করা হয় তাহলে কাজটা করা যাবে না। দেশে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর আলাদা কাজ আছে। এলিট বাহিনীও করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তার জন্য আনসার বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এ বিলে ৭ ও ৮ ধারা অনুযায়ী পুলিশ যা করে তা করতে পারবে আনসার বাহিনী। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ এলেই আনসার বাহিনীর সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। নির্বাচনের সময় যে পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য প্রয়োজন পুলিশ বাহিনীতে এত পরিমাণ নেই। এ পর্যন্ত ৬ লাখ আনসার নিয়োগ করতে হয়েছে। নির্বাচনের সময় সমপরিমাণ আনসার বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ২০১৪ সালের নির্বাচন কেন্দ্র করে অগ্নিসন্ত্রাস করা হয়। তখন দেশ অচল করে দেওয়ার সময় আনসার বাহিনী রাস্তাঘাট পরিষ্কার করেছে। যানবাহন চলাচলের নিশ্চয়তা প্রদান করেছে। পুলিশের সমান্তরাল বাহিনী হিসেবে আনসারকে তৈরির পরিকল্পনা সরকারের নেই। সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার জন্য পাহাড়ে আনসার রয়েছে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর