বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নেতা-কর্মীরা আসছেন ঢাকায়, সর্বাত্মক প্রস্তুতি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

নেতা-কর্মীরা আসছেন ঢাকায়, সর্বাত্মক প্রস্তুতি

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। যে কোনো মূল্যে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সমানে এই কর্মসূচি পালনে বদ্ধপরিকর দলটি। এ জন্য চলছে ধারাবাহিকভাবে প্রস্তুতি সভা। একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে দলটি। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে ওইদিনের কর্মসূচি শেষ করতে চায় তারা। তবে মহাসমাবেশ ঘিরে সরকারের তৎপরতা দেখে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। খবর দলীয় সূত্রের। জানা যায়, ঢাকার এই মহাসমাবেশকে বাঁচা-মরার লড়াই হিসেবেই দেখছেন দলটির নেতারা। তাই কর্মসূচি সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। সমাবেশ সফল করতে প্রতিদিনই চলছে নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি সভা। বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা  দফায় দফায় বৈঠক করছেন। বিভিন্ন টিম গঠন করে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলা ও বিভাগ কেন্দ্রিক চলছে প্রস্তুতি সভা। সভা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে- শান্তিপূর্ণভাবে মহাসমাবেশ সফল করাই এই মুহূর্তে তাদের মূল লক্ষ্য। বিএনপি আগ বাড়িয়ে কোনো সংঘাতে যাবে না। নেতারা মনে করেন, মহাসমাবেশে বড় জমায়েত করতে পারলে তাদের জনসমর্থন সবাই প্রত্যক্ষ করবে। এতে সরকারের ওপর বিদেশিদের চাপ আরও বাড়বে। জানা যায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে সাংগঠনিক ১০ বিভাগে একটি করে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। সমন্বয় কমিটিতে কেন্দ্রীয় নেতারা রয়েছেন। যারা এখন সব সাংগঠনিক জেলা সফর করছেন। তারা প্রতিটি জেলা ও উপজেলা থেকে কর্মী-সমর্থকদের ঢাকায় আসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতারা জানান, ঢাকায় মহাসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে ক্ষমতাসীন দল কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, অন্যদিকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরাও সেসব কাটিয়ে উঠতে কী কৌশল নিতে পারে তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। যদিও দলের কেউ কেউ মনে করছেন, আগের মতো এবারের মহাসমাবেশে সরকার বাধা দেবে না। জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতাকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি। তবে সারা দেশে আবারও গণগ্রেফতার শুরু হওয়ায় নেতা-কর্মীদের নিজ বাড়িতে না থেকে নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে জামায়াতে ইসলামীও এবার যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের দিন তারাও রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে। সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বাইরে অন্যান্য ইসলামিক দল ও ডান-বামসহ সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে চলমান যুগপৎ ধারার এক দফার আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টায় আছে বিএনপি। এদিকে সারা দেশে এখন বিএনপির স্লোগান ‘চলো চলো, ঢাকা চলো’। সে অনুযায়ী সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীরা ঢাকায় আসা শুরু করেছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, নেতা-কর্মীদের বাধাহীনভাবে ঢাকায় আসতে হলে কমপক্ষে মহাসমাবেশের আগের দিন ঢাকায় আসতে হবে। যে কারণে নেতা-কর্মীদের সুবিধামতো সময়ে ঢাকায় আসতে বলা হয়েছে। বিশেষ কোনো কাজ না থাকলে ২৬ অক্টোবরের মধ্যে ঢাকায় আসতে বলা হয়েছে। মহাসমাবেশকে সামনে রেখে সরকার নানা প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে পারে, নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে সারা দেশ থেকে ঢাকায় আসতে যত ধরনের কৌশল আছে, তা গ্রহণ করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১৬ অক্টোবর যুবদলের সমাবেশ এবং ১৮ অক্টোবর বিএনপির জনসমাবেশে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ ঢাকায় রয়ে গেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত দিনগুলোতে সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে এমনকি নেতা-কর্মীরা যাতে সমাবেশে যোগ দিতে না পারেন সে জন্য রাস্তায় রাস্তায় হয়রানি, গ্রেফতারসহ গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তাই আগেভাগেই নেতা-কর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। আওয়ামী লীগের কোনো ভয়-ভীতি, তাদের সভা-সমিতি যত কিছু করুক মানুষকে তাদের দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো কিছুতে আটকে রাখতে পারবে না।

সর্বশেষ খবর