শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পথে পথে চেকপোস্ট প্রবেশমুখে তল্লাশি

পরীক্ষা করেছে পরিচয়পত্র ও মোবাইল ফোন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মহাসমাবেশ সামনে রেখে ঢাকার প্রায় সব প্রবেশ মুখে চেকপোস্ট বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব চেকপোস্টে যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি করা হয়। এর মধ্যে সন্দেহভাজনকে তল্লাশির আওতায় দেখেছে পরিচয়পত্র। অনেক ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনও পরীক্ষা করা হয়। সন্দেহ হলেই যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। অস্ত্র, বিস্ফোরক, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল, দেশি অস্ত্র নিয়ে কেউ যেন রাজধানীতে প্রবেশ করতে না পারে তা চেকপোস্টে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ সময় ৩ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

গতকাল বিভিন্ন স্পট ঘুরে এবং খোঁজখবর নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। ভোর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালিয়েছে পুলিশ ও র‌্যাব। এ সময় ঢাকামুখী দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস, গণপরিবহন, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। চেকপোস্টগুলোতে দায়িত্বরত পুলিশ-র‌্যাব যাত্রী ও চালকরা কে, কোথায় যাচ্ছে তা জানতে চেয়েছে। বাসে যাত্রীদের ব্যাগ এবং ব্যক্তিগত গাড়ির ভিতর ও পেছনে তল্লাশি করা হয়। তল্লাশি চলাকালে ডেমরার সুলতানা কামাল সেতুর চেকপোস্টে গ্রেফতার হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি নেতা মো. জুনায়েদ, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বিএনপি নেতা শাহজাহান মিয়া, ঝালকাঠির বিএনপি নেতা হাসিবুল হাসান আকন্দসহ বেশ কয়েকজন।

এ ছাড়া ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের উত্তরার বিএনএস সেন্টারে, ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের ধউর চেকপোস্ট, উত্তরার কামাড়পাড়া, খিলক্ষেতের ৩০০ ফুট, মহাখালীর আমতলী, উত্তরখানের তেরমুখ ব্রিজ, দক্ষিণখানের আজমপুর, আবদুল্লাহপুর রেলগেট, কসাইবাড়ী, হাজী ক্যাম্প, বিমানবন্দরের জসিম উদ্দিন পাকার মাথা, আশুলিয়ার বিরুলিয়া ব্রিজ এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালিয়েছে পুলিশ ও র‌্যাব। তবে এসব চেকপোস্টের বাধা উপেক্ষা করেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঢাকায় প্রবেশ করতে দেখা যায়।

পুলিশের সূত্রগুলো বলেছে, ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল ও চেকপোস্ট জোরদার করা হয়েছে। রাজনৈতিক সমাবেশ সামনে রেখে এসব চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় যানবাহনের গন্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় ঢুকবে, এর মধ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে। এ জন্য টহল পার্টি ও চেকপোস্ট জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমন্বয় করে কাজ করছে।

নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের আশপাশে ৬০টির বেশি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা বসিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পুলিশ বলেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি সমাবেশে আসা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এগুলো বসানো হয়েছে। সেন্ট্রাল মনিটরিং ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্যামেরাগুলো থেকে পাওয়া ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে সমাবেশস্থল নজরে রাখবে। এ ছাড়া সাদা পোশাকে পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যামেরা নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।

র‌্যাব সদর দফতর সূত্রে বলছে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীতে দেড় হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট ও টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়েছে র‌্যাব। এর মধ্যে আবদুল্লাহপুর, রামপুরা, পূর্বাচল ৩০০ ফুট ও আমতলীতে চেকপোস্ট বসিয়েছে র‌্যাব-১; বসিলা, আগারগাঁও ও শিশুমেলার সামনে র‌্যাব-২; কমলাপুর, সচিবালয় ও নটর ডেম কলেজের সামনে র‌্যাব-৩; কচুক্ষেত, টেকনিক্যাল, মিরপুর কাজীপাড়া, সাভার ও মানিকগঞ্জে র‌্যাব-৪ এবং ডেমরা, পোস্তগোলা ও সায়েদাবাদে চেকপোস্ট বসিয়েছে র‌্যাব-১০।

ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার জানান, নগরবাসীর নিরাপত্তা ও যে কোনো ধরনের নাশকতা রোধে ডিএমপির ৮টি বিভাগ চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম জোরদার করেছে। বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে চালক ও যাত্রীদের তল্লাশি করা হয়েছে। সন্দেহভাজন বা কোনো মামলার আসামি পাওয়া গেলে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর