শিরোনাম
শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজপথেই সমাধান খুঁজছে বিএনপি

নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া ভোটে যাবেন না নেতা-কর্মীরা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

রাজপথেই সমাধান খুঁজছে বিএনপি

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া তারা শুধু অংশ নেবেন না, তা নয়- আগামীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতেও দেবেন না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রশ্নে এবার যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোও তৎপর হয়েছে। এ পরিস্থিতিকে বিশেষ সুযোগ হিসেবে দেখছেন তারা। মনে করছেন, এবার সরকার যদি আগের মতো নির্বাচন করে ফেলে তবে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বিএনপি। সেজন্য এই পর্যায়ে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া ছাড়া পিছপা হওয়ার সুযোগ নেই। টানা কর্মসূচি নিয়েই মাঠে থাকবে বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতারা যতই আটক থাকুক, দলটি সমাধান খুঁজছে রাজপথেই।

জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, চলমান আন্দোলন বিজয় না হওয়া পর্যন্ত চলতেই থাকবে। জনগণের আন্দোলন কখনো বৃথা যায় না। এই আন্দোলনও বৃথা যাবে না। রিজভী বলেন, বিএনপি একটি সমুদ্র। এ থেকে এক পদ্মা সমান পানি নিলেও সমুদ্রের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে সমুদ্রের তান্ডবও খুব ভয়ানক। আর সরকারের জন্য তা-ই অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করেই বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের শাসনে বিএনপির কেন্দ্র থেকে একেবারে ইউনিয়ন পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা মামলার বোঝা বইছেন। তাদের বড় অংশ বছরের পর বছর এলাকায় থাকতে পারেননি। তারা এবার আন্দোলনে সক্রিয় হয়েছেন। বিএনপির আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে একই কর্মসূচি পালন করেছে জামায়াতসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা ৩৬টি দল। কাল রবিবার থেকে সারা দেশে ফের ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ               ডেকেছে বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা দলগুলো। তারা বলছেন, ২৮ অক্টোবরের পরবর্তীতে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে মহাসড়কগুলো ছিল একেবারে ফাঁকা। রাজধানীতে স্বল্পসংখ্যক গণপরিবহন চলাচল করলেও ব্যক্তিগত গাড়ি বের করেননি অনেকে। নৌপথেও লঞ্চ চলাচল করেনি। ট্রেন চলাচল করলেও যাত্রী ছিল কম। এতে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপির আন্দোলনের প্রতি সাধারণ মানুষের নীরব সমর্থন রয়েছে। এটি আন্দোলনের এক ধরনের বিজয়। তাই চলমান আন্দোলন থেকে পিছু হটার সুযোগ নেই। তাই তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত টানা কর্মসূচি থাকবে। যদি তফসিল ঘোষণা হয় তবে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে পারে বিএনপি।

জানা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে দফায় দফায় দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সূত্র জানিয়েছে, মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের যে কোনো কৌশলে গ্রেফতার এড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেলায় জেলায় আরও কঠোরভাবে কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায়ে আগামীতে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি পুরো দেশকে কার্যত অচলের চিন্তা দলটির। কর্মসূচি পালনকালে সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কর্মীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আন্দোলন কর্মসূচি সরাসরি তদারকি করছেন তারেক রহমান। ভার্চুয়ালি বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। কখনো মাঠের সক্রিয় কর্মীদের সঙ্গে ফোনে নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন। এ ছাড়া অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতারা মাঠের কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন।  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বিএনপির আর পিছু ফেরার সময় নেই। গ্রেফতার করে, হুলিয়া দিয়ে আন্দোলন স্তব্ধ করার সুযোগ নেই। বিএনপির প্রতিটি কর্মীই নেতার ভূমিকা পালন করে এ আন্দোলনে       সফলতা আনবে।

সর্বশেষ খবর