রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গার্মেন্টে বিক্ষোভ অব্যাহত সংঘর্ষ গুলি

প্রতিদিন ডেস্ক

গার্মেন্টে বিক্ষোভ অব্যাহত সংঘর্ষ গুলি

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে চলমান আন্দোলনে গাজীপুরের শ্রীপুর ও সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। এ সময় শ্রমিকদের ছোড়া ইটে দুই পুলিশ কর্মকর্তা এবং পুলিশের টিয়ার শেল ও ছররা গুলিতে অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত  হয়েছেন। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-সাভার : বেতন বাড়ানোর দাবিতে গতকাল সকাল থেকে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের কয়েক দফা পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং ইটপাটকেলের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ছররা গুলি ছোড়ে। এতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি কারখানার ফটক ভাঙচুর করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপে অন্তত ২৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ছররা গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখা  গেছে।  পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আশুলিয়ায় জামগড়া এলাকার কারখানাগুলোয় সকাল থেকে কাজ শুরু করেন শ্রমিকরা। তবে বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা হাজিরা দিয়েই বের হয়ে যান। পরে তারা আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের জামগড়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ তাদের সড়ক  থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় ছররা গুলিও ছোড়ে পুলিশ। আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জয় ভট্টাচার্য বলেন, সকালে তিনজন স্পি­ন্টারের আঘাত পাওয়া রোগী পেয়েছিলাম। তাদের মধ্যে একজনকে চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠানো হয়েছে। অপর দুজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ফটক ভাঙচুর হওয়া প্রাইম ক্যাপ বিডি লিমিটেডের নিরাপত্তাকর্মী রুবেল বলেন, আমাদের কারখানায় সকাল থেকেই কাজ চলছিল। ১০টার দিকে কিছু শ্রমিক কারখানার সামনে এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করে আমাদের শ্রমিকদের বের হতে বলেন। কিন্তু কেউ বের হননি। এরপর বাইরের শ্রমিকরা ফটক ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা চলে যায়। আহত ফারজানা বলেন, জামগড়ায় কেনাকাটা করতে আসছিলাম। এমন সময় পুলিশ গ্যাস মারলে বসে পড়ি। পরে দেখি পিঠ জ্বলতেছে, রক্ত বের হচ্ছে। ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কে নেমে সড়ক অবরোধ ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। গাজীপুর : গাজীপুরে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে সদর উপজেলার নতুনবাজার এলাকার এস এম নিট গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর সহকারী পুলিশ সুপার  মো. আসাদ, পরিদর্শক আবদুর নুরসহ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় এক নারী গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও মালিকপক্ষের লোকজন কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর