রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাস্ক পরে মাঠে টাইগাররা

দিল্লির সবচেয়ে ঘনবসতি এলাকা পাহাড়গঞ্জ। পুরনো দিল্লির এলাকাটি পুরান ঢাকার মতো ঘিঞ্জি। স্বাভাবিক ছন্দে হাঁটাচলা করা ভীষণ কঠিন। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যস্ত এলাকাটি পরিণত হয় জনারণ্যে। পাহাড়গঞ্জ থেকে অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের দূরত্ব গুগল ম্যাপে ৩ কিলোমিটার। ট্যাক্সি কিংবা অটোতে আসতে বড় জোর ২০-২৫ মিনিট সময় লাগার কথা! অথচ গতকাল বাংলাদেশের অনুশীলন ধরতে স্টেডিয়ামে আসতে সময় লেগেছে প্রায় সোয়া ঘণ্টা! দূষণের শহর দিল্লির আরেক বড় সমস্যা জ্যাম। সেই জ্যামকে সঙ্গী করেই চলাচল করে নগরবাসী। জ্যাম সইয়ে নিলেও দিল্লিবাসীর মূল লড়াই এখন দূষণের সঙ্গে। দূষণের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে, দিল্লি সরকার শহরের প্রাথমিক স্কুলগুলো দুই দিন বন্ধ ঘোষণা করেছে। শ্বাসকষ্ট ও গলায় অস্বস্তি এড়াতে ঘরে বসে কাজ করার অনুরোধ করেছে। গতকাল রাজধানী দিল্লির একিউ ছিল ৩৯৮! ঢাকার একিউ ছিল ২০৬। দূষণের মাত্রা মারাত্মক বলে গতকালের অনুশীলন বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ অনুশীলন করেছে ফ্লাড লাইটের আলোয় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

ঠিক ৬টায় টাইগার ক্রিকেটাররা স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন। সবার আগে মাঠে ঢোকেন টাইগার হেড কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে। সঙ্গে ছিলেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। দুজনে মাঠে প্রবেশ করেন মাস্ক পরে। মাঠে ঢুকেই দুজনে ছুটে যান উইকেটের দিকে। ঘাস আচ্ছাদিত উইকেট দেখে দুজনে কথা বলেন নিজেদের মধ্যে। এরপর মুশফিক, মুস্তাফিজুর রহমানরা মাঠে প্রবেশ করেন। আধা ঘণ্টা সাজঘরে বসে থেকে দূষণ এড়াতে ক্রিকেটাররা ব্যাটিং ও বোলিং অনুশীলন করেন ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। সেখানে ব্যাটিং করেন লিটন দাস, তানজিদ তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিক ও তৌহিদ হৃদয়। অনুশীলনে ১৩ ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন। আসেননি দুজন। অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামেই ৬ নভেম্বর দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিজেদের অষ্টম ম্যাচ খেলবে। এই ম্যাচ দিয়েই অরুণ জেটলিতে শেষ হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। সাকিব বাহিনী ১১ নভেম্বর পরের ম্যাচ খেলতে যাবে পুণে। সেখানে মুখোমুখি হবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার। কলকাতার ‘নন্দকানন’ ইডেনের পর ভারতের দ্বিতীয় পুুরনো অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম। পুরনো নাম ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়াম। ফিরোজ শাহ কোটলা কেল্লার পাশে বলেই স্টেডিয়ামটির নাম হয়েছে। টাইগার ক্রিকেটারদের কাছে খুব অপরিচিত স্টেডিয়াম নয়। ২০১৯ সালে এখানে একটি টি-২০ ম্যাচ খেলে মুশফিকুর রহিমের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেটে জিতেছিল টাইগাররা। টাইগারদের পরিচিত স্টেডিয়ামটি আবার রমন লাম্বার পরিচিত মাঠ। এখানে খেলেই ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন লাম্বা। ঢাকার ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিচিত মুখ লাম্বা। ভারতের হয়ে চারটি টেস্ট ও ৩২ ওয়ানডে খেলা লাম্বা মারা যান ঢাকায়। ১৯৯৮ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের এক ম্যাচে ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে হেলমেট ছাড়া ফিল্ডিং করার সময় মাথায় আঘাত পান। সেই আঘাতে রক্তক্ষরণ হয় লাম্বার এবং মারা যান হাসপাতালে। কেল্লা লাগোয়া স্টেডিয়ামের মূল গেট দিয়ে প্রবেশের সময় দুই পাশে ভারতের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, এমন সব ক্রিকেটারের ছবি টাঙানো দেওয়ালে। মনসুর আলি খান পাতৌদি, কপিল দেব, শচীন টেন্ডুলকাল, বিরেন্দার শেভাগ, বিরাট কোহলি, মহিন্দার অমরনাথদের সঙ্গে টাঙানো আছে রমন লাম্বার ছবি।

সর্বশেষ খবর