বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভোটে তৃণমূল বিএনপি : তৈমূর

অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভোটে তৃণমূল বিএনপি : তৈমূর

তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, তৃণমূল বিএনপি হবে পশ্চিমবঙ্গের মতো বাংলাদেশের তৃণমূল কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন। সাধারণ মানুষ যাতে অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারে সেই বার্তা নিয়েই আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবে তৃণমূল বিএনপি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সব আয়োজন সরকারকেই করতে হবে। দেশের জনগণ ২০১৪ ও ’১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি চায় না। আস্থাহীন নির্বাচনে যাবে না তৃণমূল বিএনপি। যারা সুস্থ রাজনীতি করেন তারা গাড়ি পোড়াতে পারেন না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

নির্বাচনে বড় কোনো দলের সঙ্গে জোট হবে কি না জানতে চাইলে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন,  তৃণমূল বিএনপি বড় দলের সঙ্গে যেয়ে তাদের স্বার্থ হাসিলে সহায়ক হবে না। তৃণমূল বিএনপির নেতৃতেই জোট হতে পারে। লিখিত বা অলিখিতভাবে নির্বাচনী জোট হতে পারে। এমন একটি জোট গঠনের কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, তারা গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান।  নির্বাচনের পরিবেশ সরকারকে এমনভাবে করতে হবে যেন জনগণ ভোট দিতে আকৃষ্ট হয়। জনগণের কাছে দাবি হলো কে তাদের বন্ধু,  কে  শত্রু- এটা তাদের চিহ্নিত করতে হবে। জনগণের সম্পদ কারা লুট করে খায়, কারা লুটেরা, এমপি পদ ব্যবহার করে সম্পদ বানায়, চাঁদাবাজি করে, এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে এগুলোও জনগণকে চিহ্নিত করতে হবে। জনগণকে এমন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে হবে যাদের কাছে দেশটা নিরাপদ। এর জন্য সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে যেন ২০১৪ ও ’১৮ এর পুনরাবৃত্তি  না হয়। জনগণ যেন তার পছন্দের ব্যক্তিতে নির্বাচিত করতে পারে। সহিংসতার মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন সম্ভব কি না জানতে চাইলে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, হরতাল-অবরোধ পাক-ভারত উপমহাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতির জ্বালাও-পোড়াও আর গণগ্রেফতার দুটিরই বিরোধিতা করি। শুধু দলের কমিটিতে নাম থাকার কারণেই গ্রেফতার করা হবে তা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা সুস্থ রাজনীতি করেন তারা গাড়ি পোড়াতে পারেন না। দলীয় সরকারের অধীনে আগামীতে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ কথা বলে প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। যেহেতু সংবিধানে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যকতা রয়েছে তাই সরকার বিরোধী দলের দাবি না মেনে নিলেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হতেই হবে। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন দেশে বা আন্তর্জাতিকভাবে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে প্রশ্নের জবাবে তিনি  বলেন, সবকিছুর মূলে জনগণের আস্থা,  আমরা বিতর্কিত নির্বাচন চাই না। তৈমূর আলম খন্দকার তার দল প্রসঙ্গে বলেন, প্রথমত দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, দ্বিতীয়ত রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই তৃণমূলের অন্যতম প্রতিশ্রুতি। একক নেতার সিদ্ধান্তে দল চলবে না। সামষ্টিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তৃণমূল বিএনপি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নয়। জনগণের দল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান করছে। তিনি বলেন, দলের সব সদস্য হবে তৃণমূল বিএনপির নেতা। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তাদের আসতে হবে না। দলের শীর্ষ নেতারা যাবে তৃণমূলের কাছে। তৃণমূল বিএনপি হবে মেহনতি মানুষের দল। জনগণের কল্যাণই হবে তাদের রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, তারা আগুনসন্ত্রাসে বিশ্বাসী নন। নিয়মনীতি মেনে পরিচালিত হবে তাদের দল। বিএনপির চলমান অবরোধ কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, এক সময় বিএনপির রাজনীতি করেছি। বিএনপির সবাই জ্বালাও-পোড়াওয়ের সঙ্গে জড়িত নয়। এ জন্য সবাইকে ঢালাওভাবে দোষারোপ করা ঠিক হবে না। যারা প্রকৃতপক্ষে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর