বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের তারিখ নিয়ে কয়েক প্রস্তাব

গোলাম রাব্বানী

ভোটের তারিখ নিয়ে কয়েক প্রস্তাব

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি অবহিত করতে আজ দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এ সময় ভোটের সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি তারিখ রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করবে কমিশন। এরপর আগামী সপ্তাহ তথা ১৪ বা ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। এর আগে কমিশন আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গুছিয়ে আনার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার ‘উপযুক্ত পরিবেশ’ তিনি দেখতে পাচ্ছেন। গতকাল নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণরূপে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মতো পরিবেশ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর ইসি।

ইসিসূত্র জানিয়েছেন, তফসিল নিয়ে দুই ধরনের চিন্তা রেখেছে ইসি। প্রথম তফসিল দিয়ে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তা আবারও পরিবর্তন করা হতে পারে। এজন্য ভোটের বেশ কয়েকটি তারিখ চিন্তায় রেখেছে কমিশন। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ তথা ২৮ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ; এ ক্ষেত্রে এ তারিখ আবার পরিবর্তন হতে পারে। এ ছাড়া ২, ৩, ৭, ৮, ৯ বা ১১ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ আলোচনায় রয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে কমিশনের আনুষ্ঠানিক সভার ওপর। কমিশন সভায় নতুন তারিখও নির্ধারণ হতে পারে। সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে কমিশনের। সে কাজটি জানুয়ারির শুরুতেই সেরে ফেলতে চায় কমিশন। ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ‘নির্বাচন অত্যাসন্ন। সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। রেওয়াজ অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার আগে কমিশন মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। আগামীকাল (আজ) এ সাক্ষাতের সূচি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন প্রস্তুতিসংক্রান্ত সব ধরনের অগ্রগতি বিষয়ে তারা অবহিত করবেন। প্রস্তুতি নিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির পরামর্শ ও নির্দেশনা থাকলে তা কমিশন শুনবে।’ তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বেতার ও টেলিভিশনে ভাষণ দিয়ে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন। তবে তার আগে কমিশন সভায় সে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। সেই সভা এখনো হয়নি জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘ইতোমধ্যে কমিশন বারবার বলেছে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের যে কোনো দিন তফসিল হতে পারে। সে হিসেবে ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারবে।’ আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কমিশনের সাক্ষাতের পর শুক্র ও শনিবার ডিসি-এসপিদের নিয়ে রয়েছে নির্বাচনি কর্মশালা। এরপর ১২ থেকে ১৪ নভেম্বরের কোনো একসময় তফসিল হতে পারে কি না- জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে, তখন গণমাধ্যমে জানানো হবে।... নির্বাচন কমিশনের যেসব প্রস্তুতিমূলক কাজ রয়েছে, তা এগিয়ে রাখা হয়েছে। নির্বাচনি মালামালও ধাপে ধাপে জেলা পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে।’ ভোটের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সচিব বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মাঠে থাকবেন। ভোটাররা নির্বিঘ্নে যাতে ভোট দিতে পারেন সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করবে এবং সেভাবে মন্ত্রণালয় কাজ করবে।’ লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপনির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন শেষ করতে হবে কমিশনকে। সেই ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে ১ নভেম্বর। আর নির্ধারিত পদ্ধতিতে (দলীয় সরকারের অধীনে) ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (মেয়াদ শেষের আগের ৯০ দিনে) এ নির্বাচনের আয়োজন করতে কমিশন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

সর্বশেষ খবর