বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের নির্বাচনি কৌশল নির্ধারণ আজ

রফিকুল ইসলাম রনি

নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন, তফসিল পরবর্তী দলীয় কর্মসূচি এবং বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের পথ নির্ধারণসহ নানা সিদ্ধান্ত নিতে আজ বিকালে বৈঠকে বসছে আওয়ামী লীগ। বিকাল সাড়ে ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সভায় ১০টি এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার আগে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের এ বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে। এর মধ্যে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে করণীয় কী? আবার বিএনপি নির্বাচনে না এসে ২০১৪ সালের  ৫ জানুয়ারির মতো ভোট ঠেকাতে ফের নাশকতা-সন্ত্রাস করলে সাংগঠনিকভাবে করণীয় কী সেসব কৌশল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের খসড়া অনুমোদন, স্লোগান নির্ধারণ করা হতে পারে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পরিচালনা কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম মারা যাওয়ার পর কো-চেয়ারম্যান নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। সে বিষয়েও পরিষ্কার করা হবে আজকের বৈঠকে। এ ছাড়াও সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সারা দেশের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্রের দাম ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার করার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হবে। দলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আজকের বৈঠকে নির্বাচনি ইশতেহারের খসড়া অনুমোদন, নির্বাচনের সর্বশেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে আলোচনা, সারা দেশে নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ ছাড়াও বিএনপি-জামায়াত যে নৈরাজ্য শুরু করেছে, তা মোকাবিলার জন্য করণীয়, সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রার্থী দেবেন, তাদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দেওয়া হবে।’  

দলীয় সূত্র জানায়, সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য ১০টি সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- শোক প্রস্তাব, ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, ২৪ জানুয়ারি গণ-অভ্যুত্থান দিবস পালন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও সাব-কমিটি গঠন, সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা, সাংগঠনিক প্রতিবেদন দাখিল ও বিবিধ।

জানা গেছে, আজকের সভায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এবং বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে দলকে পুরোপুরি নির্বাচনমুখী করতে চায় ক্ষমতাসীনরা। একই সঙ্গে সভায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা- বিশেষ করে তৃণমূলের পরিস্থিতি তুলে ধরে সাংগঠনিক প্রতিবেদন দাখিল করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এর মধ্য দিয়ে সারা দেশের কোন সাংগঠনিক জেলায় কী সমস্যা তা উপস্থাপন করে সমাধানের নির্দেশনা চাইবেন তারা। এ ছাড়া দলীয় প্রার্থী বাছাই এবং মনোনয়ন ফরম বিক্রির তারিখ নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়েও আলোচনা হবে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই কার্যনির্বাহী কমিটির সভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও বিভিন্ন উপকমিটি গঠন করা হবে। আমাদের নির্বাচনি ইশতেহার নিয়ে আলোচনা হবে। দলীয় মনোনয়ন ও মনোনয়ন ফরম বিক্রির বিষয়সহ নির্বাচনের অন্য প্রক্রিয়াগুলো নিয়েও আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে। নির্বাচনে বিজয়ে জনগণের ম্যান্ডেট আদায়ের কৌশল নিয়েও আলোচনা হবে।

অন্যদিকে নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপিসহ বিরোধীদের অবস্থান ও তাদের কর্মকান্ডের বিষয়গুলোও নীতিনির্ধারণী ফোরামের আলোচনায় আসবে বলে জানা গেছে। বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় নিজেদের করণীয় বিষয়েও নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন সামনে রেখে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলের তৎপরতা নিয়েও আলোচনা হবে। আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণার বিষয়গুলো নিয়েও। নির্বাচনি প্রস্তুতির পাশাপাশি সামনের দিনের বিভিন্ন দিবসভিক্তিক কর্মসূচি চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসূচি নিয়েও আলোচনা হবে। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে। পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নেত্রী (শেখ হাসিনা) বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন।

সর্বশেষ খবর