বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পরিবেশ চাই, বলল জাতীয় পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ইলেকশন কমিশন (ইসি) তফসিল ঘোষণা করেছে, ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের ধারণা ছিল সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে নিয়ে বসা বা একটা পরিবেশ যদি হতো, এমন অবস্থায় যদি তফসিল ঘোষণা হতো তাহলে ভালো হতো। তিনি বলেন, ইসির তফসিল নিয়ে আমাদের কোনো কথা নেই। আমাদের কথা একটাই, নির্বাচনের পরিবেশ আমরা চাই।

গতকাল বনানী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টির দলীয়ভাবে সব প্রস্তুতি আছে। প্রার্থী বাছাই, মেনুফেস্টু, ফরম ছাপানো সব কাজ করে রেখেছি। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না নির্বাচন করব কী করব না। তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণা করবে ইসি, এটা তাদের বাধ্যবাধকতা। তারপরও এটা বলতে পারি, তফসিল ঘোষণা করলেও পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকার যদি উদ্যোগ নেয় বা আলোচনার উদ্যোগ নেয়, তাহলে তফসিলের তারিখ পরিবর্তনের ক্ষমতা আছে ইসির। এ রকম নজির আছে। বর্তমান সরকারের অধীনে হওয়া নির্বাচনের অভিজ্ঞতা নেতিবাচক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) পাস করতে পারবে কনফার্ম। তারপরও তারা সিল মারছে। কেন? কারণ সিল মারাটা তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। একটা ম্যানিয়া হয়েছে। পাস করবে তারপরও তারা সিল মারবে। মানে কষ্ট করতে রাজি নয়। ভোটারদের তারা কষ্ট দিতে চায় না। তারা মনে করে ভোটাররা কেন কষ্ট করবে। তারা নিজেরা করে ফেলে। এই কারণে আমরা নির্বাচনে যাব কী যাব না- এই প্রশ্নে পড়ে রয়েছি।

জাপা মহাসচিব বলেন, গত পাঁচ বছরে এই সরকারের অধীনে যেসব নির্বাচন হয়েছে সেখানে আমাদের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। দেখা যায় যে সরকারদলীয় প্রার্থীর জোরজবরদস্তি। আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন উঠিয়ে নিতে চাপ, সিল মারা। এসব কারণে নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হয়েছে। সবশেষ দুই উপনির্বাচন লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমরা কখনোই আশা করিনি আমাদের প্রার্থী পাস করবে। সংগঠনের সক্রিয়তার জন্য সেখানে প্রার্থী দেই। ওই নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ কর্মীরা সহ্য করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, আমাদের তৃণমূল নেতারাও বলছেন এই সরকারের আমলে হওয়া নির্বাচন ভালো হয়নি। তারা দলের চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন। নির্বাচন কী প্রক্রিয়ায় হবে এ বিষয়ে বড় দুই দলের ঐকমত্য না থাকাকে জাতির জন্য দুঃখজনক উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, তারা যদি এমনই করবে তাহলে এরশাদের পদত্যাগ করার দরকার ছিল না। এরশাদের আমলের চেয়ে গণতন্ত্রের দিক দিয়ে, দুর্নীতির দিক দিয়ে, রাজনৈতিক ও নির্বাচনের অবস্থা, ভোটের অধিকার বলেন- এগুলো তারা যদি ভালো না করেন তাহলে এরশাদ পদত্যাগ করলেন কেন? এই প্রশ্নের জবাব তো তারা দিতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এক দফায় আটকে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন, আর বিএনপির এক দফা আওয়ামী লীগ চলে যাবে। এক দফা দুই দলের ইগো প্রবলেম হয়ে গেছে। তাদের এক দফার একগুঁয়েমি ও ইগো প্রবলেম। এই কারণে দেশের মানুষ আজ জিম্মি। মানুষ ভয় ও আতঙ্কে আছে। জাতীয় পার্টি সহিংসতা পছন্দ করে না জানিয়ে দলের মহাসচিব বলেন, এগুলো বড় দুই দলই করে। এগুলা ভালো নয়। মানুষকে কষ্ট দেয়। বড় দুই দলকে এক দফা দাবি থেকে সরে আসার আহ্বান জানাব। এক দফা থেকে সরে এসে তাদের আলোচনায় বসা উচিত।

সর্বশেষ খবর