শিরোনাম
সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
অযোগ্যই থাকছে নির্বাচনে

জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায় বহাল আপিল বিভাগে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলে হাই কোর্টের রায় বহাল রয়েছে। গতকাল প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে আগামী নির্বাচনে দলগতভাবে অংশগ্রহণে অযোগ্যই থাকছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এ দলটি। কয়েক দফা সময় দেওয়ার পর গতকাল শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে গতকালও জামায়াতের আপিলের পক্ষে নিয়োজিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা উল্লেখ করে ছয় সপ্তাহের সময়ের আবেদন করেন আইনজীবী মো. জিয়াউর রহমান। ওই সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আবেদন রিফিউজ করছি। আপনি প্লেস (আপিল) করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড কোথায়? জিয়াউর রহমান বলেন, তিনিও উপস্থিত নেই। পরে আদালত বলেন, ডিসমিসড ফর ডিফল্ট আদেশ দেন।

আদালতে জামায়াতের বিরুদ্ধে করা আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর ও আহসানুল করিম। তারা জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নিষেধাজ্ঞা এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে শুনানি করতে চান। তারা বলেন, এরা (জামায়াত) মিটিং-মিছিল করে যাচ্ছে। আদালত সম্পর্কে মন্তব্য করছে, অবমাননা করছে। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। অবমাননা হলে হাই কোর্টে প্রপার বেঞ্চে আবেদন করেন। আদেশের পর জামায়াতের পরবর্তী আইনি সুযোগ সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, তারা রেস্টোরেশন বা রিভিউ আবেদন করতে পারেন। সেটি না করা পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে। আর আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর সাংবাদিকদের বলেন, তারা (জামায়াত) যদি কোনো মিছিল, মিটিং, সমাবেশ অথবা বৈধ রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচয় দিতে যায় বিভিন্ন দূতাবাস, বিদেশি সংস্থা বা কোনো রাষ্ট্রের কাছে, তখন আমরা নতুন করে কনটেম্পট (আদালত অবমাননা) নিয়ে আসব। ১২ বছর ধরে তারা কালক্ষেপণ করছে। তাদের যদি কোনো যুক্তি থাকত তাহলে তারা এটা করত না। তারা নিজেরাই জানে কোনো মেরিট নেই। তাই বারবার কালক্ষেপণ করেছে। এবার আপিল বিভাগ ডিসমিস ফর ডিফল্ট করে দিয়েছেন। জামায়াতের আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর পরবর্তী নির্দেশনার আলোকে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করব। তবে স্বাভাবিকভাবে জামায়াতের রাজনীতি বহাল থাকবে। সংবিধান অনুযায়ী রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। রাজনীতি করার সুযোগ অব্যাহত আছে এবং থাকবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। ওই নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন তরীকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ২০১৩ সালের ১ আগস্ট অবৈধ বলে রায় দেন হাই কোর্ট। পরে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল বিভাগে আবেদন করে। ওই আবেদনটি চলতি বছর শুনানির উদ্যোগ নেয় রিটকারী পক্ষ। এদিকে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নিষেধাজ্ঞা এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে গত জুনে আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ কয়েকজন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর