মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

তৃতীয় দিনেও উৎসবমুখর আওয়ামী লীগ কার্যালয়

বিক্রি আরও ৭৩৩ মনোনয়নপত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃতীয় দিনেও উৎসবমুখর আওয়ামী লীগ কার্যালয়

মনোনয়নপত্র বিক্রি কেন্দ্র করে উৎসবমুখর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিক্রির তৃতীয় দিনেও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল উৎসব-উচ্ছ্বাসে ভরপুর। অন্যান্য দিনের মতো গতকালও অধিকাংশ মনোনয়নপ্রত্যাশী নিজেদের জনপ্রিয়তার জানান দিতে শোডাউন করতে এতটুকু কমতি রাখেননি। কোনো নেতার অনুসারীরা এসেছিলেন মোটরসাইকেল শোভযাত্রা করে, কেউবা অর্ধশত ট্রাক-পিকআপ করে, কারও অনুসারীরা এসেছিলেন একই রঙের টি-শার্ট ও টুপি পরে। আবার অনেক নেতার অনুসারীদের হাতে ছিল ছবিযুক্ত প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও বড় বড় ডিজিটাল ব্যানার। আজ মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমাদানের শেষ দিন। বৃহস্পতিবার দলের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক হতে পারে। ওই বৈঠকে চূড়ান্ত হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা নিয়ে লড়বেন কারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রির তৃতীয় দিনে ৭৩৩টি পত্র বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে তিন দিনে ৩ হাজার ১৯ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনলেন। এতে দলের ফান্ডে জমা পড়েছে রেকর্ডসংখ্যক ১৫ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর ৩০০ আসনের প্রতিটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা ১০-এর অধিক।

নবীন-প্রবীণ পোড় খাওয়া মাঠের নেতা, সাবেক মন্ত্রী-এমপি, ছাত্রলীগের একঝাঁক সাবেক নেতা ছাড়াও শিক্ষাবিদ, আইনজ্ঞ, সাংবাদিক, চলচ্চিত্র ও ক্রীড়াঙ্গনে মাঠ কাঁপানো তারকা- সবাই এবার চান আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আইনসভার সদস্য হতে। আওয়ামী লীগের নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশার লোকজন লাইন দিয়ে, শোডাউন করে কিনেছেন মনোনয়নপত্র। মনোনয়ন পেলে সবাই দৃঢ় আশাবাদী, ভোটারদের মন জয় করে আইনপ্রণেতা হিসেবে নির্বাচিত হবেন। তবে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তৃতীয় দিনের মনোনয়নপত্র বিক্রি শেষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, তৃতীয় দিনে সরাসরি ৭০৯টি ও অনলাইনে ২৪টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। তৃতীয় দিনে দলীয় ফান্ডে জমা পড়েছে ৩ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমা গ্রহণের শেষ দিন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল সকাল ১০টায় তৃতীয় দিনের মতো দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমা গ্রহণ শুরু হয়। শনি ও রবিবারের চেয়ে এদিন মনোনয়নপ্রত্যাশীর উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে অনুসারীদের নিয়ে দলে দলে কার্যালয়ের সামনে আসেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান, পল্টনে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।

দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে অনেকে মিছিল নিয়ে, সমর্থক অনেকে প্ল্যাকার্ড হাতে, অনেকে টি-শার্ট পরে এসেছেন। ভিড় থাকায় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছেন অনেকেই। ভিতরে প্রবেশের সময় ধস্তাধস্তি হতেও দেখা গেছে। এ সময় পাশ থেকে অনুসারী কর্মী-সমর্থকদের নানা ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়। কার্যালয়ের ভিতর থেকে মাইকে বারবার সবাইকে নির্দেশনা মেনে সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হলেও তাতে কান দেননি অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশীই। প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে রবিবার তিন দফা দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে হয় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে।

গতকাল যাঁরা মনোনয়নপত্র তুলেছেন ও জমা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন : বাগেরহাট-১ শেখ হেলাল উদ্দিন, জামালপুর-৫ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, মাদারীপুর-২ ও ৩ দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, জামালপুর-৩ টানা ছয়বারের এমপি ও দলের সাংগঠনিক মির্জা আজম, খুলনা-৩ দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বাগেরহাট-২ শেখ সারহান নাসের তন্ময়, বরিশাল-২ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, ঢাকা-১৩ অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, কুষ্টিয়া-৩ মাহবুব-উল আলম হানিফ, চট্টগ্রাম-১৫ আমিনুল ইসলাম আমিন, নড়াইল-২ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, ফেনী-৩ শহীদকন্যা অভিনেত্রী শমী কায়সার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ চিত্রনায়িকা শারমীন আকতার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহি, ঢাকা-১৭ ও টাঙ্গাইল-১ টিভি অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক এবং বরিশাল-৩ আসন থেকে চিত্রনায়ক মাসুম পারভেজ রুবেল। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের তিন নেতা। তাঁরা হলেন বাসদ সভাপতি রেজাউল রশিদ খান সিরাজগঞ্জ-৬, সদস্য হামিদুল সুনামগঞ্জ-২ ও মো. বকুল হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন। গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তাঁরা।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আলহাজ শাহজাহান ভুইয়া, ঠাকুরগাঁও-২ মাজাহারুল ইসলাম সুজন, বরিশাল-৪ পঙ্কজ দেবনাথ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, বরিশাল-৬ প্রকৌশলী এস এম মঞ্জুরুল হক, আলতাফ হোসেন খান ভুলু, বাগেরহাট-৪ এ এইচ এম বদিউজ্জামান ভুইয়া সোহাগ, ঢাকা-১৪ এস এম মান্নান কচি, ঢাকা-১৬ ইসমাইল হোসেন, ঢাকা-৯ গিয়াস উদ্দিন পলাশ, কুড়িগ্রাম-১ রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, চাঁদপুর-২ মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কিশোরগঞ্জ-১ কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন, ঢাকা-১৫ গাজী মেসবাউল হক সাচ্চু, ময়মনসিংহ-৪ এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু, খুলনা-৪ শেখ মুনির আহমেদ এমবিএ, ভোলা-৩ নুরনবী চৌধুরী শাওন, ময়মনসিংহ-৭ নুরুল আলম পাঠান মিলন, ময়মনসিংহ-৯ মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম, ঢাকা-৫ মশিউর রহমান সজল, ঢাকা-১৮ নাজমা আকতার, খুলনা-৫ চৌতালী হাওলাদার, ঢাকা-৪ আকাশ কুমার ভৌমিক, ঢাকা-৬ হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, নেত্রকোনা-৫ অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, কুষ্টিয়া-৩ ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, কুষ্টিয়া-৪ ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, সুনামগঞ্জ-৪ পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক, ঢাকা-৫ কামরুল হাসান রিপন, সিরাজগঞ্জ-৪ নাজমুল হুদা মিঠু, সিরাজগঞ্জ-৩ হোসনে আরা পারভীন লাভলী, সিরাজগঞ্জ-১ তানভির শাকিল জয়, পিরোজপুর-৩ তাজউদ্দিন আহমেদ তাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু আব্বাস ভুইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ এম এ করিম, ঢাকা-৮ ডা. মু. নজরুল ইসলাম, নাটোর-৩ শফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-৬ ফারজানা রহমান, ফেরদৌস রহমান শান্তা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ মো. রকিবুল হোসেন, জয়পুরহাট-১ এ ই এম ওয়াজেদ পান্না, রাজশাহী-৩ নাহিদ হোসাইন, নাটোর-১ সুলতানা পান্না, নাটোর-২ খোন্দকার ইমতিয়াজ আহমেদ, পাবনা-২ আহমেদ ফিরোজ কবির, নাটোর-৩ শাকিল আহমেদ শফি, পাবনা-২ খোন্দকার জাহাঙ্গীর কবির, পাবনা-৪ আকরাম হোসেন, নাটোর ৪ কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, রাজশাহী-২ রমজান আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ সোহেল হাসান শাহীন ও জামাল উদ্দিন, বগুড়া-৬ ও ৭ এস এম টি জামান নিকেতা, সিরাজগঞ্জ-৩ স্বপন কুমার রায়, বরগুনা-১ খলিলুর রহমান, পাবনা-৪ মুসলিমা জাহান, পাবনা-৫ বেলায়েত আলী, নারায়ণগঞ্জ-৩ কায়সার হাসনাত, সিরাজগঞ্জ-২ আল মাহমুদ সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ নাজমুল হুদা, জয়পুরহাট-১ তৌফিদুল ইসলাম বুলবুল, নওগাঁ-৬ জি এম মাসুদ রানা, নাটোর-১ কামরুজ্জামান খোকন, রাজশাহী-৪ আ ফ ম জহুরুল হক, বগুড়া-২ আজিজুল হক, রাজশাহী-২ আহসানুল হক, সিরাজগঞ্জ-২ রাশেদ ইউসুফ জুয়েল, নওগাঁ-৪ সুলতান মাহমুদ, রাজশাহী-৩ মাহমুদ ফয়সল, রাজশহী-১ আসাদুজ্জামান, সিরাজগঞ্জ-৫ কামরুল ইসলাম, নওগাঁ-২ আমিনুল হক, বগুড়া-১ আবদুর রহমান, কুমিল্লা-৯ আবদুল মান্নান, চাঁদপুর-৫ শাহ কামাল ও মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কুমিল্লা-৬ কবিরুল ইসলাম শিকদার ও আলী আকবর, কুমিল্লা-৪ মোহাম্মদ আলমগীর, কুমিল্লা-১১ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ফেনী-১ মোহাম্মদ ইলিয়াস জাকারিয়া, চট্টগ্রাম-১২ প্রদীপ কুমার দাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ মোহাম্মদ বকুল হুসেন, শেখ ইব্রাহিম, এম এ করিম, নোয়াখালী-১ আতাউর রহমান ভুইয়া, মানিক দেবনাথ, নোয়াখালী-৩ মো. আতাউর রহমান ভুইয়া, চাঁদপুর-২ মনজুর আহমদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ সিরাজুল ইসলাম, এ কে এম আবুল খায়ের, নুরুল ইসলাম, কুমিল্লা-৮ এনায়েত উল্লাহ, কুমিল্লা-৫ আল আমিন, কুমিল্লা-১১ আয়েশা জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ মাসুদুর রহমান, ফেনী-৩ সামছুল আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ ছাইফ উদ্দিন আহমেদ, নোয়াখালী-৬ বদরুল হায়দার চৌধুরী, চাঁদপুর-৪ বদরুন নাহার ভুইয়া, লিয়াকত হোসেন খান রনি, মোহাম্মদ আমীর আজম রেজা, মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, হারিছ মিয়া শেখ, কুমিল্লা-১ খাদিজা আক্তার, লক্ষ্মীপুর-৩ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, চাঁদপুর-৩ রেদওয়ান উদ্দিন খান বোরহান, কুমিল্লা-৯ মোহাম্মদ নুরনবী ভুইয়া, কুমিল্লা-৫ মো. ওমর ফারুক, নোয়াখালী-২ এস এম ইসমান কাউছার, লক্ষ্মীপুর-৪ তুহিন আকতার, লক্ষ্মীপুর-১ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, নোয়াখীল-৩ অমিয় পাপন চক্রবর্তী, কুমিল্লা-১১ বাহারউদ্দিন বীরপ্রতীক, কুমিল্লা-৫ মোকবুল হোসেন ভুইয়া এবং চাঁদপুর-৫ আসনে অ্যাডভোকেট নুরজাহান বেগম প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর