মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৭ লাখ সদস্য

আচরণবিধি দেখভালে মাঠে নামছেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৭ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এ জন্য নির্বাচনি দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনের কাছে বিভিন্ন বাহিনী প্রায় ১ হাজার ৭১ কোটি টাকা চেয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে গতকাল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, সংসদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৭ লাখ সদস্য নিয়োজিত করা হবে। এর মধ্যে আনসারের ৫ লাখ ১৬ হাজার সদস্য, কোস্টগার্ডের ২ হাজার ৩৫০ জন, বিজিবির ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন, পুলিশের (র‌্যাবসহ) ১ লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন থাকবেন। অর্থাৎ ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩২২ জন সদস্য ভোটের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। তিনি বলেন, যারা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের সঙ্গে সোমবার বৈঠক হয়েছে। এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকের অংশ। তিনি বলেন, বাজেট কখনো চূড়ান্ত হয় না। সম্ভাব্য বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়। পার ডে, পার পারসন হিসাবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত হার অনুযায়ী কত সংখ্যক নিয়োগ হবে, বিষয়টি নিয়ে মূলত আলোচনা হয়েছে। তারা একটি বরাদ্দ অ্যাডভান্সড চেয়েছে। কতটুকু আমরা বরাদ্দ দেব, এসব নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, জনপ্রতি আনসার ৬৩৭ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা, কোস্টগার্ড ৬৩৭ টাকা থেকে ১ হাজার ৮২০ টাকা, বিজিবি ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২২৫ টাকা ও পুলিশ ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০৬ টাকা পাবেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। এ ব্যয়ের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ রাখা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়। বিভিন্ন বাহিনী মোট ১ হাজার ৭১ কোটি টাকা চেয়েছে। সবচেয়ে বেশি টাকা চেয়েছে পুলিশ। বাহিনীটি চাহিদা দিয়েছে ৪৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আনসার বাহিনী চেয়েছে ৩৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা। বিজিবি ১৪৫ কোটি ৮৭ লাখ, র‌্যাব ৫০ কোটি ৬৩ লাখ, কোস্টগার্ড ৭৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা চেয়েছে। জানা গেছে, জ্বালানি, ভাতা, খাবার ইত্যাদি খাতে বাহিনীগুলো নির্বাচনি দায়িত্ব পালনের জন্য চাহিদা দেয়। সে চাহিদা পর্যালোচনা করে বরাদ্দ দেয় কমিশন। ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, তারা তাদের চাহিদা দিয়েছে। কিন্তু কোন বাহিনীকে কত টাকা দিতে হবে তা নির্ধারণ হবে পরে। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আচরণবিধি দেখভালে মাঠে নামছে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, ২৮ নভেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি তারা মাঠে থাকবেন : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণ বিধি প্রতিপালন নিশ্চিতে নির্বাচনি মাঠে নামছে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। ৩০০ নির্বাচনি আসনে ২৮ নভেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা আচরণবিধি দেখভালে নিয়োজিত থাকবেন। গতকাল এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। ইসির চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান। চিঠিতে বলা হয়েছে- আদিষ্ট হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ১৫ নভেম্বর সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এর আওতায় আচরণ বিধি প্রতিপালনার্থে প্রত্যেক নির্বাচনি এলাকায় প্রয়োজনীয় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এ লক্ষ্যে ৩০০টি নির্বাচনি এলাকায় ২৮ নভেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন। চিঠিতে বলা হয়েছে- (ক) ন্যূনতম প্রতি ৩ ইউনিয়নের জন্য একজন, দুর্গম (পার্বত্য এলাকাসহ) ও দূরবর্তী ২ ইউনিয়নের জন্য ১। (খ) প্রতি পৌরসভার জন্য তিনজন, তবে বৃহৎ পৌরসভার ক্ষেত্রে চারজন; (গ) সিটি করপোরেশন এর প্রতি ৪-৫টি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য একজন, তবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চ প্রতি ৩ ওয়ার্ডের জন্য একজন। (ঘ) সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ব্যতীত সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে সংশ্লিষ্ট উপজেলায়/থানায়/জোনে/এলাকায় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ করা যাবে। যেসব উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মরত নেই সেসব উপজেলায়, বিভাগ/জেলা পর্যায়ে কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্য হতে অথবা অন্যকোনো দফতর/প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্য হতে নিয়োগ দেওয়া যাবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে সমন্বয় করত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

সর্বশেষ খবর