বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের পরিবেশ দেখতে মাঠে যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশনাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ দেখতে জেলায় জেলায় সফরে যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশনাররা। এ সময় তারা রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন। এদিকে সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরকে ত্রাণ, অনুদান, নতুন প্রকল্প গ্রহণ স্থগিত রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান মাগুরা, ঝিনাইদাহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলা সফরে যাচ্ছেন। কাল সকালে তিনি ঝিনাইদাহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই পাঁচ জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা ২৬ নভেম্বর রাজশাহী বিভাগ সফরে যাচ্ছেন। ২৭ নভেম্বর তিনি বগুড়ার বিয়াম ফাউন্ডেশন অডিটোরিয়ামে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, ও নওগাঁর রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এ ছাড়া ২৮ নভেম্বর রাজশাহীতে তিনি রাজশাহী, পাবনা, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান ২৩ নভেম্বর সিলেট ও সুনামগঞ্জ সফরে যাচ্ছেন। ওই দিন তিনি দুই জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। ২৪ নভেম্বর তিনি মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করতে নির্বাচন কশিমন সর্বাত্মক চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের তাঁদের দায়িত্ব ও করণীয় সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে এবং এ জন্য ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে মাননীয় কমিশনাররা বিভাগ-জেলা পর্যায়ে আজ থেকেই সফরে যাচ্ছেন। এ সময় তারা রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিবেন।

ভোটের আগে নতুন প্রকল্প না নেওয়ার নির্দেশ ইসির :

সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার করে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার বন্ধ করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রার্থী সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পত্তি তথা অফিস, যানবাহন, মোবাইল ফোন, টেলিফোন, ওয়াকি-টকি বা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরকে ত্রাণ, অনুদান, নতুন প্রকল্প গ্রহণ স্থগিত রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান পৃথক চারটি নির্দেশনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং রেড ক্রিসেন্টকে এ নির্দেশনা পাঠিয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার দিন হতে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল হতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ প্রদান বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না। এ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উন্মোচন করা যাবে না। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় অনুদান-ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ইতিপূর্বে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত বা প্রদান করা নিতান্ত আবশ্যক হলে জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে- নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান-ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যে সব ত্রাণ কার্যক্রম পূর্ব হতে পরিচালিত হচ্ছে তা চালু থাকবে।

সেই সঙ্গে নির্বাচন সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত নতুনভাবে গৃহীত অনুদান-ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্যও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কোনো এলাকায় অনুদান-ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত নতুন কার্যক্রম গ্রহণ আবশ্যক হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ-জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি হতে নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান-ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যে সব ত্রাণ কার্যক্রম পূর্ব হতে পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার দিন হতে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল হতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ প্রদান বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না।

নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান-ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যে সব ত্রাণ কার্যক্রম পূর্ব হতে পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর