বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রফিকের বিরুদ্ধে দুই মামলা

আইনি ব্যবস্থায় ছাড় নেই : এসপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রফিকের বিরুদ্ধে দুই মামলা

রফিকুল ইসলাম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমি দখল, হত্যাচেষ্টা, বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের নামে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দুটি নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্তে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ব্যাপারে দোষীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। দুটি মামলাই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তাফা রাসেল জানান, রফিকের বিরুদ্ধে দুটি মামলার একটি ডিবিতে তদন্ত ও অন্যটি রূপগঞ্জ থানায় এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা আদালতের আদেশের কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। অপরাধী কাউকে একবিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না। বিবাদীদের বিরুদ্ধে অতীত অপরাধমূলক কর্মকান্ড আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী আমরা মামলা নিচ্ছি। আদালতের আদেশ মেনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো ছাড় নেই। গতকাল বিকালে রূপগঞ্জ থানার ওসি এ এফ এম সায়েদ বলেন, মামলা রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু এসপির নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। জেলা ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়েছি রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাগজপত্র হাতে পাইনি। সেটা পেলেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধী যেই হোক, ছাড় দেওয়া হবে না। এর আগে রবিবার (১৯ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দুটির আবেদন করেন ভুক্তভোগী আলী আজগর ভূঁইয়া ও মো. মামুন। মামলায় রফিকসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করেন মামুন আর আলী আজগরের মামলায় ৩১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। দুই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি আছেন আরও প্রায় ৫০ জন। রবিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কায়সার আলমের আদালত শুনানি শেষে মামুনের অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং আলী আজগর ভূঁইয়ার আবেদনটি গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেন। আলী আজগরের মামলায় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। মামুনের মামলায় রফিকুলসহ ১৮ জনের নামে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। দুটি মামলাতেই জমি রেজিস্ট্রি করে না দেওয়ায় দেশি অস্ত্র নিয়ে বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, আসবাব, টাকা, স্বর্ণালংকার, গবাদি পশুসহ মালপত্র লুটের অভিযোগ আনা হয়।

মামলার পর আবার হামলা-হুমকি : মামলা দায়ের করার পর বাদীর বাড়িতে আবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। মামলা তুলে না নিলে রফিক বাহিনী সাত হাত মাটির নিচে পুঁতে ফেলার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক মামলার বাদী আলী আজগর ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ১৯ নভেম্বর আদালতে মামলার আবেদন করার পর ওই দিন সন্ধ্যায় রফিকের হুকুমে আবারও সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। মামলা তুলে না নিলে আমাদের সাত হাত মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে গেছে। বর্তমানে আমরা আতঙ্কে বাড়িছাড়া। বাড়িতে আমার বৃদ্ধ মা-বাবাকে দেখার কেউ নেই। সব সময় আতঙ্কে থাকেন। কোনো আত্মীয় আমাদের বাড়িতে যেতে পারে না। রফিকের সন্ত্রাসী বাহিনী প্রতিদিন অস্ত্রসহ মোটরসাইকেলে আমাদের বাড়ির সামনে মহড়া দিচ্ছে। পশ্চিমপাড়ায় কাদেরের তিন তলা বিল্ডিংয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে আস্তানা বানিয়েছে রফিকের ভাই শফিক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর