বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটে যেতে তৎপর সাবেক এমপি ও নেতারা

বিদেশি দূতাবাসগুলোতে চিঠি বিএনপির

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

বিএনপির সাবেক এমপি দলছুট নেতারা ভোটে যেতে তৎপর। তারা যোগাযোগ বাড়াচ্ছে তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, জাতীয় পার্টি, কল্যাণ পার্টিসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে। আবার এসব দলও বিএনপির দলছুট, হতাশাগ্রস্ত ও বিএনপির প্রতি বিরক্ত নেতাদের দলে ভেড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে। শুধু বিএনপি নয়, আন্দোলনে থাকা সমমনা শরিক দলগুলোর নেতাদেরও নির্বাচনে ভেড়ানোর জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছে নতুন ও পুরনো এসব দল। সবারই টার্গেট বিএনপির সাবেক এমপি এবং কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতা। সে ক্ষেত্রে বিএনপি থেকে বের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের নিয়ে গঠিত কয়েকটি দলের সমন্বয়ে  হতে পারে একটি নতুন জোট। এসব নিয়ে বিএনপির ভিতরে তোলপাড় চলছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার তথাকথিত কিংস পার্টি, ভুঁইফোড় পার্টি, ড্রিংস পার্টি, ছিন্নমূল পার্টি তৈরি করে তামাশার নির্বাচন মঞ্চস্থ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপিকে এর আগেও ভাঙার চেষ্টা করেছে সরকার, সফল হয়নি। গণবিরোধী সরকারগুলোই এসব নোংরামি করে। এগুলো করে বিএনপির প্রতি জনগণের সমর্থন কমানো যাবে না।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিএনপির সাবেক নেতা শমসের মবিন চৌধুরীকে চেয়ারম্যান এবং তৈমূর আলম খন্দকারকে মহাসচিব করে পুনর্গঠন করা হয় তৃণমূল বিএনপি। সেদিন থেকেই নতুন এ দলটি নির্বাচনে আসার প্রক্রিয়া শুরু করে। এরপর সক্রিয় হতে থাকে বিএনপি থেকে বের হওয়া কিছু নেতার সমন্বয়ে গঠিত বিএনএম। ১৫ নভেম্বর বিকালে রাজধানীর মালিবাগ এলাকার স্কাই সিটি হোটেল লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট খন্দকার আহসান হাবিব এবং ব্যারিস্টার এ কে এম ফখরুল ইসলাম ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চ নামের একটি রাজনৈতিক দলের। ১২৫ জন বিএনপি নেতাসহ নির্বাচনে অংশ নেবেন বলেন জানান তারা। গত শনিবার হঠাৎ করেই গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূল বিএনপির শীর্ষনেতারা। তারা ৩০০ আসনে নির্বাচন করবেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান। গত সোমবার বিকালে হঠাৎ সংবাদ সম্মেলন ডাকে বিএনএম। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শাহ মো. আবু জাফরকে করা হয় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় কয়েকদিনের মধ্যে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা বিএনএম-এ যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। গতকাল এক দফা ছেড়ে ‘যুক্তফ্রন্ট’ গড়ে ভোটে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন বিএনপির সমমনা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। কল্যাণ পার্টি ছাড়া যুক্তফ্রন্টের বাকি দুই দল হলো বাংলাদেশ মুসলিম লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন)। সূত্র জানিয়েছে, এই জোটেরও টার্গেট বিএনপির নেতারা। সূত্র জানায়, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, বিশেষ করে জেলার শীর্ষনেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিএনপি থেকে বের হয়ে যেসব নেতা নির্বাচনে অংশ নেওয়া কয়েকটি দলের সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে একটি নতুন জোট।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, আমরা ৩০০ আসনে নির্বাচন করব। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আমরা আরও আগে থেকে শুরু করেছি। নির্বাচনে কে এলো না এলো এটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমরা হয়তো জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করব।

বিদেশি দূতাবাসগুলোতে চিঠি দিয়েছে বিএনপি : বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনাসহ চলমান হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, বিস্ফোরণ, দলীয় নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘরে হামলা, লুটপাট এবং গুপ্তহত্যার বিবরণ তুলে ধরে এই চিঠি দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশনে এই চিঠি দিয়েছে দলটি। চিঠিটি স্বাক্ষর করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। জানা গেছে চিঠিতে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অগ্নিসংযোগ ও সংঘাত নিয়ে ক্ষমতাসীন দলকে দায়ী করে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ‘চলমান গুম, খুন এবং সহিংসতার’ বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর