রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটে যাচ্ছে ২৮ দল

বিএনপিসহ ১৩ দল যাচ্ছে না

জুলকার নাইন ও গোলাম রাব্বানী

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২৮টি রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় জোট এবং এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে দলগুলো। কেউ নিজের প্রতীক আবার কেউবা রাখছে জোটের প্রতীক হিসেবে অন্য কোনো বড় দলের প্রতীক। নির্বাচনে যাওয়া দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দল হিসেবে রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিপরীতে অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ ১৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের শেষমুহূর্তে এসেও তিনটি রাজনৈতিক দল এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এই তিন দল রয়েছে দোটানায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়া নিয়ে শেষমুহূর্তে আরও সিদ্ধান্ত বদল হতে পারে। অনেক দলেরই একাংশ নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে রয়েছে। সেক্ষেত্রে দল ভেঙে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। ইতোমধ্যেই কয়েকটি দলের একাংশের পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। নির্বাচনে যাওয়া দলের সংখ্যা চূড়ান্ত হতে ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে চিঠি ও রাজনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে পাওয়া তথ্যানুসারে, নির্বাচনে যাওয়া ২৮ দলের তালিকায় রয়েছে- আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু), জাকের পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এমএল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএনএল, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি।

ভোটে যাচ্ছে না ১৩ দল : নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে নিয়েছে ১৩টি দল। সেই দলগুলো হলো- বিএনপি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিশ, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ (আম্বিয়া)। এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ভোটে যাবে কি না- এমন দলের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও গণফোরাম। এর মধ্যে গণফোরাম গতকাল হাইকমান্ডের বৈঠকে ৩৫ জনের মধ্যে ২৩ জন ভোটে না যাওয়ার পক্ষে কথা বলেছেন। ৯ জন দিয়েছেন মিশ্র সিদ্ধান্ত। ফলে দল হিসেবে তারা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম চায় রাজনৈতিক সমাধান। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়ে এখনো হ্যাঁ বা না কোনো সিদ্ধান্তই নেয়নি।

জানা যায়, নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া ২৮ দলের মধ্যে আওয়ামী লীগসহ ৯টি রাজনৈতিক দল ‘নৌকা’ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ইসিকে চিঠি দিয়েছে। এগুলো হলো- জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু) ও তরিকত ফেডারেশন। তবে বিকল্প ধারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল হিসেবে অংশগ্রহণ করবে, নির্বাচনে দলীয় প্রতীক কুলা নিয়ে তারা লড়বেন। তবে একই সঙ্গে পরবর্তীতে জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জোটগত প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী দলটি। গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এখনো জোটের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রয়োজন হলে জোট নাও হতে পারে।

সর্বশেষ খবর