সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
পররাষ্ট্র সচিব

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া পাল্টাপাল্টি অনভিপ্রেত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি অবস্থান অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, এটা আমি মন্তব্য করতে চাই না। বাংলাদেশে কী হচ্ছে না হচ্ছে, সেটা নিয়ে আমরা বলতে পারি। তৃতীয় বা চতুর্থ দেশ তাদের মধ্যে কী আলাপ-আলোচনা করছে, এটা আমাদের জন্য খুব একটা... বিষয়টা অনভিপ্রেত বলা যায়। আমরা আলোচনা করতে চাই না। গতকাল ভারতের নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে দেশে ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে না চাইলেও যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি অবস্থান তো বাংলাদেশ নিয়েই এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এর আগে চীনকেও দেখেছি আলোচনা করতে। আমরা তো কারও কাছে মন্তব্য করতে সলিসিট (অনুরোধ) করিনি। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশের অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে সরকারে অঙ্গীকারে আস্থা রয়েছে ভারতের। সে জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নয়াদিল্লির মাথাব্যথা বা উদ্বেগ নেই। নয়াদিল্লির বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের নির্বাচন আছে সামনের বছরে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের নির্বাচন নিয়ে ওদের যে অভিমত এটা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টু প্লাস টু ফরমেটের পর তারা বলেছে, তৃতীয় দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না ভারত। নির্বাচন আমাদের অভ্যন্তীরণ বিষয়। বাংলাদেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি ঠিক করবেন। ওই আঙ্গিকে তিনি (ভারতের পররাষ্ট্র সচিব) বলেছেন। তিনি বলেন, এটা আমাদের অভ্যন্তীরণ বিষয়। আমাদের দেশের জনগণই এবং যে সংবিধান আছে সে অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আমাদের যে লক্ষ্য আছে, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার অঙ্গীকার আছে; সে ব্যাপারে তারা (ভারত) আস্থা রাখে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা বলেছি, বাংলাদেশের মাটিতে অন্য কোনো তৃতীয় দেশের কোনো উপাদানকে আমরা সহ্য করি না। এটার সুফল আমরা দেখতে পাই, নর্থ স্টেটে ইন্ডিয়ান স্টেটগুলোতে। সেখানে শান্তি বিরাজ করছে, উন্নয়ন হচ্ছে। তারা এটার প্রশংসা করেন। আমরা বলেছি, এ ব্যাপারে আমরা কমিটেড। তিনি বলেন, তিস্তা নিয়ে আমরা অনেকদিন থেকে বলে আসছি। সামনে গঙ্গা চুক্তি শেষ হবে, ২০২৬ শেষ হবে। সে ব্যাপারে টেকনিক্যাল কমিটির আলোচনা শুরুর ব্যাপার আছে। ছয়টি অভিন্ন নদীর বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা আছে। সেগুলো যেন সামনের দিনে আরও বেগবান করা যায় সেটার বিষয়ে আমরা একমত পোষণ করেছি। কনস্যুলার ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, কনস্যুলার ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। এখনো ভিসা দিতে একটু দেরি হচ্ছে। ওনারা অতিরিক্ত লোক লাগিয়েছে, আরও লাগাবে। নৌপথে যাতায়াতের জন্য আলাদা ভিসা ব্যবস্থা করা যায় কি না- এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দিল্লিতে অবস্থান করে বাংলাদেশের জন্যও দায়িত্বপ্রাপ্ত এমন ৯০টি দেশের মিশনপ্রধানদের ব্রিফ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব জানান, আমাদের যে নির্বাচনের শিডিউল হয়ে গেছে সে ব্যাপারে তারা জানে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্রিফ করেছি তাদের। নির্বাচন কমিশনের যে কর্মকা-, নির্বাচন কমিশনের যে গাইডলাইন রয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে, সেটা সবাইকে দিয়েছি। তারা অনেকে বলেছে, আগামীতে তারা ঢাকায় দূতাবাস খোলার বিষয়ে আগ্রহী। বেশ কয়েকটা দেশ ছিল। এর মধ্যে কলম্বিয়া ছিল। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে বিষয়টি বিচারাধীন হওয়ায় এ বিষয়ে বেশি আলোচনা করতে চায় না ভারত। আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেশে ফেরানো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

সর্বশেষ খবর