ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বিপরীত ও মারমুখী রাজনীতির কারণে দেশের মানুষ হেরে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অবস্থানে পরস্পর বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে সহিংস অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরি হচ্ছে। যা দেশকে আরও সংকটের মুখে ফেলবে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে পূর্বনির্ধারিত ফর্মুলায় ক্ষমতায় যাওয়া বা আঁকড়ে থাকার পরস্পর বিপরীতমুখী অবস্থানে অনড়, সহিংস অস্থিতিশীল রাজনীতিতে হেরে যাচ্ছে দেশের মানুষ। এতে অগণতান্ত্রিক শক্তি বিকাশের ঝুঁকি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষ ও স্বার্থে দ্বন্দ্বমুক্ত ভূমিকা নিশ্চিতে উপযোগী পরিবেশ তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন তার নিজস্ব নির্বাচনি কৌশলপত্রের ঘোষণা অনুযায়ী কোনো উদ্যোগ নেয়নি। নিরপেক্ষ, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি কার্যকর পদক্ষেপের উদাহরণ দেখাতে পারেনি। দায়সারাভাবে আলোচনার আহ্বান জানিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেন, নিয়মরক্ষার নামে একতরফা নির্বাচন ক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারে- গণতন্ত্র নয়; জনগণের আস্থাও নয়, ভোটাধিকারও নয়। একইভাবে, সহিংসতা গণতান্ত্রিক উদ্দেশ্য অর্জনের পথ হতে পারে না। ড. জামান বলেন, গত এক মাসে প্রায় ২০০টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে, ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি না গণপরিবহনে আগুন দিয়ে কীভাবে গণতন্ত্র হয়। আবার এই নাশকতার দায় কার, সেটা নিয়েও পাল্টাপাল্টি রাজনীতি হচ্ছে। এসব গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের সম্পূর্ণ অকার্যকরতার আলামত।

এ আত্মঘাতী রাজনীতি থেকে আমরা কবে বেরিয়ে আসতে পারব? টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা সব সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর জবাবদিহি চাই। মৃত মানুষের নামে, প্রবাসীর নামে মামলা হচ্ছে। যাদের নামে মামলা হচ্ছে, তাদের না পাওয়া গেলে, পরিবারের সদস্যদের আটক করা হচ্ছে। এর নাম কি ন্যায়বিচার! এ কি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা? মারমুখী রাজনীতি গণতন্ত্রকেই ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে। দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে তাই সব পক্ষকে আমরা আহ্বান জানাই, এবার গণতন্ত্রকে সুযোগ দিন, জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিন, জনগণকে সুযোগ দিন।