সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিকল্প কর্মসূচির কথা ভাবছে বিএনপি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

হরতাল-অবরোধের বিকল্প কঠোর কর্মসূচির কথা ভাবছে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি। এ দুটি কর্মসূচি ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছে বলে বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলছে দলটির উচ্চপর্যায়ে। নমিনেশন দাখিলের সময় শেষ হলে বিক্ষোভ-ঘেরাও অসহযোগের মতো নতুন কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। তবে পরিস্থিতি একতরফাভাবে এগোতে থাকলে নির্বাচনের দিনকে ঘিরে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। কয়েক দিন ধরে দলটির শীর্ষ নেতাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে এসব আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

দলটির দায়িত্বশীল নেতারা জানান, টানা এক মাসের হরতাল-অবরোধে মানুষের মাঝে একগুঁয়েমি তৈরি হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের মাঝেও শৈথিল্যতা এসেছে। দীর্ঘদিন এভাবে কর্মসূচি চালানো কঠিন। পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন কেউ কেউ। পুলিশের অনুমতি ছাড়াই নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের পক্ষে মতও রয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, ইতোমধ্যে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তিন স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সিনিয়র নেতারা আটক রয়েছেন। নেতা-কর্মীদের অনেকের বিরুদ্ধেই মামলা বা গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে নেতা-কর্মীদের মাঠে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তাদের কতটা সক্রিয় করে তোলা যাবে, আন্দোলনের লক্ষ্য কতটা অর্জিত হবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আন্দোলনের চলমান সময়কালকে দুই পর্বে ভাগ করা হচ্ছে। প্রথম পর্বে রয়েছে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এ পর্বে বিএনপি হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিই চালিয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, হরতাল-অবরোধের এ পর্ব মনোনয়নপত্র বাছাই পর্যন্ত অর্থাৎ ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাপ্তি হতে পারে। এরপর শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। এ পর্ব চলবে ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত। এ পর্বে পরিস্থিতি বুঝে এ কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিএনপির হাইকমান্ডের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে থাকা দলটির এক দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন, এ পরিস্থিতিতে নেতা-কর্মীরা যেন হতাশ না হন সেজন্য হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনার চিন্তা করা হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের কীভাবে রাজপথমুখী করা যায়, সেই চিন্তাও করছে দলীয় হাইকমান্ড। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনগণের আকাক্সক্ষার সঙ্গে সংগতি রেখে পুরনো কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। সময়মতো তা জানানো হবে। বিএনপির চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতা নিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, এ আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূলের মানুষের প্রাণের আন্দোলন। অন্যদিকে রয়েছে সব ধরনের রাইফেল, বুলেট, টিয়ার গ্যাস, গ্রেনেড নিয়ে সরকারের মারমুখী প্রশাসন, যাকে আবার সহায়তা দিচ্ছে সরকারি দলের সন্ত্রাসী বাহিনী। শুধু তা-ই নয়, সারা দেশে গ্রামগঞ্জে পুলিশ বাহিনী মধ্য রাতে আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। জনগণের এ আন্দোলন অব্যাহত রেখে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আদর্শকে আবার আমরা প্রতিষ্ঠিত করব বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সর্বশেষ খবর