মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

ভূমি ব্যবহারে মাস্টারপ্ল্যান সব উপজেলায়

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন খসড়া অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভূমি ব্যবহারে মাস্টারপ্ল্যান সব উপজেলায়

ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলায় একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ নির্দেশনার কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৩’ ‘জয়িতা ফাউন্ডেশন আইন, ২০২৩’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলাকে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে নির্দেশনা দেন। মন্ত্রিসভায়, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, স্বল্পতম সময়ের মধ্যে যেন কাজটি (মাস্টারপ্ল্যানের) সম্পন্ন হয়। এটা থাকলে আমাদের যে উন্নয়ন কাজ হচ্ছে, সেক্ষেত্রে ভূমি ব্যবহার খুবই যৌক্তিক হবে। যত্রতত্র যেন ঘরবাড়ি, শিল্প স্থাপন কিংবা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করা না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলছেন। এতে ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের একটা শৃঙ্খলা আসবে। মাহবুব হোসেন বলেন, দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করার জন্য সব মন্ত্রী-সচিবদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সব মন্ত্রী ও সচিবরা সভায় ছিলেন। বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২২-২৩ অর্থবছরের কার‌্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এ ধন্যবাদ জানানো হয়। নির্বাচনের আগে কী আর মন্ত্রিসভা বৈঠক হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, হবে না, এ রকম কোনো তথ্য জানা নেই। অনুমতি ছাড়া কারও ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত কেউ ব্যবহার করতে পারবে না- এমন বিধান রেখে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৩-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ বিষয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, তথ্য এখন সবচেয়ে বড় রিসোর্স। ডিজিটাল যুগে তথ্য ব্যবহার কৌশলগত রিসোর্স হিসেবে পরিগণিত হয়। তথ্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ। তথ্য ব্যবহারের ব্যবস্থাপনা কিংবা একজন ব্যক্তির তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার সম্মতির যে প্রয়োজন হয়, সেটি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ উপাত্ত সুরক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেই বোর্ড এসব বিষয় দেখাশোনা করবে। বোর্ডের প্রধানের পদ হবে চেয়ারম্যান, এতে চারজন সদস্য থাকবে। উপাত্ত যারা সংগ্রহ করবেন তাদের জন্য অনুসরণীয় কিছু নীতিমালা, বিধিবিধান থাকবে বলেও জানান মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই বোর্ড এসব তৈরি করবে। সেসব মেনেই সবাইকে তথ্য সংগ্রহ ও বিতরণ করতে হবে। যারা তথ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়া করবে তাদেরও বোর্ডে নিবন্ধিত হতে হবে। তিনি বলেন, তথ্যের বিভিন্ন ধরনের শ্রেণি বিভাগ থাকবে। কোনো তথ্য ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছাড়া শেয়ার করা যাবে না। কিছু তথ্য ব্যক্তি অনুমতি দিলেও নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তথ্য-উপাত্ত প্রক্রিয়া করতে পারবে। বায়োমেট্রিক উপাত্তের মধ্যে ডিএনএর বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইনে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে বিদেশি কোম্পানি আইন না মানলে বাংলাদেশে তাদের ব্যবসার যে টার্নওভার আছে তার ৫ শতাংশ জরিমানা হিসেবে আদায় করা যাবে। ‘জয়িতা ফাউন্ডেশন আইন, ২০২৩’ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জয়িতা ফাউন্ডেশন যেটি আছে সেটি কোম্পানি আইনের আওতায় রেজিস্ট্রিকৃত। এটিকে এখন পুরোপুরি নিজস্ব আইনের আওতায় করা হয়েছে এবং সংবিধিবদ্ধ আইনের আওতায় করা হচ্ছে। এ আইনে বলা হয়েছে- সেখানে একটি পরিচালনা পরিষদ থাকবে। এটার মূল চেষ্টা থাকবে নারীদের মধ্যে উদ্যোক্তা মনোভাব তৈরি করা। একই সঙ্গে যারা নারী উদ্যোক্তা হচ্ছেন তাদের সব রকমের সাহায্য-সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে এই ফাউন্ডেশন কাজ করবে, জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় সরকারের এখন কেবল রুটিন কাজ করার কথা। সেক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার বৈঠক কীভাবে হচ্ছে এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সংবিধানের বর্তমান যে বিধান আছে, সেখানে কিন্তু এখন যে সরকার আছে, স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রাখার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। সে অনুযায়ী মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর