মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গায়ের জোরে হচ্ছে কেউ মানবে না

আবদুল্লাহ আল নোমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

গায়ের জোরে হচ্ছে কেউ মানবে না

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, সরকার যদি গায়ের জোরে নির্বাচনের আয়োজন করে তাহলে জনগণ তা মেনে নেবে না। বাংলাদেশে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার পরেও নির্বাচন বাতিলের নজির রয়েছে। তাছাড়া জবরদস্তি করে একতরফা নির্বাচন করে ফেললেও পরে তা ধোপে টিকবে না। কারণ ভোটারবিহীন নির্বাচন এদেশের মানুষ আর কিছুতেই গ্রহণ করবে না। গতকাল ‘দেশের রাজনীতি, নির্বাচন প্রক্রিয়া ও বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনসহ বিদ্যমান পরিস্থিতি’ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে উপরোক্ত মন্তব্য করেন তিনি। সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, এই দেশটা অনেক রক্ত ও অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছিল। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আশা-আকাক্সক্ষা নিয়ে মানুষ সেদিন যুদ্ধ করেছিল, আজকের এই দুরবস্থা দেখার জন্য নয়। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ক্ষমতাসীন সরকার মানুষ বলেই মূল্যায়ন করছে না। প্রশাসন আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ আজ নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ধানখেতে, ঝোপ-জঙ্গলে পর্যন্ত অমানবিকভাবে রাত্রি যাপন করছে। আর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা আঙুল দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের বাড়িঘর দেখিয়ে দিয়েছিল, তেমনি আজকে ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সন্ত্রাসীরাও বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখিয়ে দিচ্ছে। শহর থেকে গ্রাম এমন কোনো এলাকা নেই, যেখানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার নির্যাতন চলছে না। বাড়িতে হানা দিয়ে বাবাকে না পেয়ে সন্তানকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, সন্তানকে না পেয়ে বৃদ্ধ বাবাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি কাশিমপুর কারাগারে পুলিশ হেফাজতে চট্টগ্রামের একজন ৬০ বছর বয়সের বিএনপি নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন। এসবের কোনো প্রতিকার নেই। বিচার নেই। আমরা এ জন্যে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করিনি। ’৭১-এ জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই মূলত আমরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলাম। তার ৫২ বছর পর আজকের দিনেও ঠিক একই প্রেক্ষাপটে আন্দোলন চলছে। তবে আশার কথা- মানুষ জেগে উঠেছে। তারা রাজপথে নেমেছে, তাদের আর দমিয়ে রাখা যাবে না। ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মতো প্রহসনের নির্বাচন এদেশের মাটিতে আর কেউ মেনে নেবে না। দেশি-বিদেশি কোনো পর্যায়েই এ ধরনের তামাশার নির্বাচন আর গ্রহণযোগ্য হবে না। ইনশা আল্লাহ জনতার বিজয় অবশ্যাম্ভাবী। তাই সরকারকে বলব- আর দেরি না করে পদত্যাগ করে জনগণের এক দফা দাবি মেনে নিন। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তাহলে দেশের জন্য, আপনাদের জন্য এবং সবার জন্যই মঙ্গল।

সর্বশেষ খবর