নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জবরদস্তিমূলক জমি দখল, হত্যাচেষ্টা, বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের দুই মামলায় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে আগাম জামিন দেননি হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রফিককে জামিন না দিয়ে জামিনের আবেদন ডিলিট করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জমি দখল, হত্যাচেষ্টা ও লুটপাটের অভিযোগে করা দুই মামলায় দুটি আবেদনে ১৮ জন আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে আদালত রফিকুল ইসলামসহ তিনজনের আবেদন ডিলিট করে বাকিদের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন। জানা যায়, গত ১৯ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রফিককে প্রধান আসামি করে পৃথক দুই মামলায় প্রায় ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী আলী আজগর ভূঁইয়া ও মো. মামুন মামলা দুটি করেন। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কায়সার আলমের আদালত শুনানি শেষে মামুনের অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং আলী আজগর ভূঁইয়ার আবেদনটি গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মামুন জানান, তাদের বাড়ির আশপাশের অনেক নিরীহ মানুষের জমি সন্ত্রাসী রফিকুল ইসলাম তার বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়ে দখল করে নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় আসামিরা দলবল নিয়ে বাড়িতে এসে তাদের পাঁচ ভাইয়ের মালিকানাধীন ৯৫ শতাংশ জমি রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মিজানুরের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে বলেন। অন্যথায় বাড়িঘর ভেঙে ফেলা ও গুলি করে পাঁচ ভাই ও মাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এরপর গত ১৯ অক্টোবর সকালে আবারও উল্লিখিত আসামিরা দেশি অস্ত্রসহ অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জনকে নিয়ে বাড়িতে এসে বাদীর মাকে দুই দিনের মধ্যে জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে হুমকি দিয়ে যান। অবশেষে গত ২১ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে আসামিরা বুলডোজার, হাতুড়ি, শাবলসহ বিভিন্ন দেশি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাড়িতে এসে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেন এবং গাভী, সোনার অলংকার, নগদ টাকা, টিভি, ফ্রিজ, আলমারিসহ ঘরের প্রায় ৬৮ লাখ ২৫ হাজার টাকার মালামাল লুট করেন। এ সময় বুলডোজার দিয়ে তারা গুঁড়িয়ে দেন তিন তলা পাকা বাড়ি। কেটে ফেলেন ৫০টি বড় গাছ। যাওয়ার সময় ২ নম্বর আসামি পিস্তল দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন এবং দ্রুত জমিজমা রেজিস্ট্রি করে না দিলে দেখামাত্র গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যান।