বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চরমোনাই পীরের তিন প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক সংকট নিরসনে তিন দফা প্রস্তাব দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (আইএবি) আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তিনি এ প্রস্তাব দেন। এ সংলাপে রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ,  সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিরা অংশ নেন। আইএবি আমির বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা তিনটি প্রস্তাব বিবেচনার জন্য পেশ করছি। প্রস্তাব তিনটি হলো- এক. বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত একতরফা তফসিল বাতিল করে গ্রেফতারকৃত বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে। দুই. বর্তমান বিতর্কিত পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে (জাতীয় সরকারের গুরুত্ব, বাস্তবতা ও রূপরেখা জাতীয়ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে)। এবং তিন. কার্যকরী সংসদ, রাজনৈতিক সংহতি এবং শতভাগ জনমতের প্রতিফলনের জন্য পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনই অধিকতর উত্তম পদ্ধতি; যা বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে, তা প্রবর্তন করতে হবে। লিখিত বক্তব্যে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আধুনিক রাষ্ট্রে সেপারেশন অব পাওয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বজনবিদিত একটি মৌলিক নীতি। সেপারেশন অব পাওয়ার নিশ্চিত করা হয় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। বর্তমান সরকার পরিকল্পনা করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে হত্যা করেছে। নির্বাচন কমিশনের মতো মৌলিক প্রতিষ্ঠানে বারবার দলকানা ব্যক্তি বসানো হয়েছে। বিচার বিভাগকে সরকারের আজ্ঞাবহ বানানো হয়েছে। নির্বাচনে বিরোধী নেতাদের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত করতে আদালতকে ব্যবহার করে গণহারে বিরোধী নেতাদের অপরাধী সাব্যস্ত করে রায় দেওয়া হচ্ছে। দুদককে বিরোধী নেতাদের দমন কমিশন বানানো হয়েছে। অডিটর জেনারেলের অফিসকে দলীয় দুর্নীতি আড়াল করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ বহু আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রীর আজ্ঞাদাসে পরিণত হয়ে আছে। রাষ্ট্রপতির চেয়ারেও এখন প্রধানমন্ত্রীর ভক্তিতে আপ্লুত ব্যক্তি বসানো হয়েছে। জনপ্রশাসনকে দলীয় কর্মী বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে। সাবেক মুখ্য সচিবরা যেভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি রাজনীতিতে ভূমিকা রাখছেন, তাতেই বিষয়টা পরিষ্কার। সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকারের অত্যাচার-নিপীড়ন সবাইকে এক করে ফেলেছে। আমরা আজ সবাই মজলুম। নিপীড়িতের ঐক্য আমরা দেখছি। তিনি বলেন, শুধু সরকার পরিবর্তন নয়। আমরা রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের সবার উদ্দেশ্য যদি ঠিক থাকে তাহলে সমস্যা সমাধান করা কঠিন কিছু না। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী, অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, গণ অধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) মিয়া মশিউজ্জামান, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর