বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইইউ রাষ্ট্রদূতরা

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় পুরো বিশ্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন গণতান্ত্রিক, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তাদের জোট। নির্বাচন কমিশনও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এমন একটা নির্বাচন আয়োজনে আশ্বাস দিয়েছে। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির অগ্রগতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জোটের রাষ্ট্রদূতরা বৈঠক করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে। এ বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে সুইডেন, স্পেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, ফ্রান্স ও জার্মানির মিশন প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বেলা ৩টা থেকে দুই পক্ষে বৈঠক হয় প্রায় দুই ঘণ্টা।

বৈঠক শেষে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি জানান, সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি ও অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইইউভুক্ত রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তার টিম খোলামেলা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে আমরা সামগ্রিক বিষয় জেনেছি। আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও অংগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। প্রত্যাশা করি। পুরো বিশ্বও এটি দেখতে চায়। ইসির সঙ্গে বিবদমান পরিবেশ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি ‘না’ বলে মন্তব্য করেন। পরে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, ইইউভুক্ত রাষ্ট্রদূতদের নয়জনের প্রতিনিধি দল এসেছিলেন। ইইউ প্রতিনিধিরা এর আগেও একাধিকবার এসেছেন। সহসাই তাদের একটা এক্সপার্ট ইলেকশন টিম আসবে জানিয়েছেন। ‘ইতোমধ্যে তাদের চারজনের এক্সপার্ট (ইলেকশন অবজারভার টিম) এসে গেছে। তারা দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে (জেনেছেন)। এরই মধ্যে আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে গেছে; এটা তো তারা জানতেন না; তারা আগেও এসেছেন। এর মধ্যে আমাদের কী কী অগ্রগতি হয়েছে তা জানিয়েছি।’ গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন সিইসি। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা আগের মতো স্পষ্ট করে বলেছি- নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার, পিসফুল অ্যান্ড ক্রেডিবল এটা যাতে হয় সেটা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা তাদের জানিয়েছি, আমাদের নির্বাচন কমিশনাররা দুই সপ্তাহ ধরে জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে গেছেন। তারা প্রশাসন, জনগণকে এ বিষয়গুলো অবহিত করছেন। যাতে করে প্রশাসন স্থানীয়ভাবে তাদের সব শক্তিতে সমন্বিত করে; যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনটা নিশ্চিত হয়। ইসির অবস্থানে ইইউ সন্তুষ্ট বলে মনে করেন তিনি। সিইসি বলেন, ‘তারা আমাদের বক্তব্যে যতদূর বুঝেছি সন্তুষ্ট হয়েছেন। আমরা আমাদের যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, একটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আইনত ও সাংবিধানিকভাবে বাধ্য সেটা আমরা খুব স্পষ্ট করে তাদের বুঝিয়েছি; আগেও বুঝিয়েছি। আমার বিশ্বাস আমাদের এ সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।’ রাজনৈতিক বিষয়ে কমিশন নিজেদের সম্পৃক্ত করবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘পলিটিক্যাল সাইডটা আমরা বলেছি- রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি কোনো মতবিরোধ, বিভেদ, বিভাজন থাকে সেখানে কোনোভাবেই আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না। আমরা নিজেদের সেখানে এঙ্গেজ করতে পারি না।’ সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সভায় অংশ নেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। ভোট হবে ৭ জানুয়ারি।

সর্বশেষ খবর