বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রফিকের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে জমি দখল, লুটপাট ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ এবং বিদেশে পাচারের অভিযোগ তদন্ত করে বিচারের দাবি জানিয়েছে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন। গতকাল ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় মানবাধিকার সংগঠনটি।

ব্যাংক লুটপাট ও অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করে রফিকুল ইসলামের মুখোশ উন্মোচন ও ব্যাংকে গচ্ছিত জনগণের টাকা উদ্ধারের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। এ ব্যাপারে সংগঠনটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতর (ডিজিএফআই) কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ড. সুফি সাগর সামস।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. সুফি সাগর সামস বলেন, দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে। অনেক বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। অথচ দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট চালিয়ে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে কিছু অসাধু চক্র। দেশকে পথে বসাতে এ জালিয়াত চক্র গত কয়েক বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামও সেই প্রতারক চক্রের একজন। রফিকুল ইসলাম ভাটারা মৌজার বেশ কয়েকটি প্লটের জমি গত বছর বিক্রি করলেও তথ্য গোপন করে একই জমির বিনিময়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে চলতি বছর ২৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন, যা সম্প্রতি সামনে এসেছে। ওই জমিতে এখন ভবন তুলছেন মূল মালিকরা। ব্যাংকটি তিন দফায় ঋণ ছাড় করলেও সে টাকা কোথায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে খোঁজ নেয়নি ব্যাংটি। তদন্ত করলে তার এমন আরও অনেক জালিয়াতির ঘটনা সামনে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস। বাড্ডার সামান্য ডিম বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম কীভাবে রাতারাতি আঙুল ফুলে টাকার কুমির হয়ে গেলেন, কোথায় কোথায় তার সম্পত্তি আছে, সম্পত্তির উৎস কী এগুলো তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। রংধনু গ্রুপের মালিক হলেও নিজ এলাকায় তিনি এখনো আন্ডা রফিক হিসেবেই পরিচিত। বিগত দিনে হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপের মতো রংধনু গ্রুপের মালিকও একইভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করছেন, যার তদন্ত হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, ব্যাংকের অর্থ লুটপাট মানে সাধারণ মানুষের অর্থ লুটপাট। এতে মানুষ ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারাবে। লুটপাটের অর্থ দেশে বিনিয়োগ করলেও অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান হতো। কিন্তু রফিকুল ইসলাম বিদেশে অর্থ পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম তার এলাকা কায়েতপাড়ায় অসংখ্য মানুষকে ভিটেমাটিছাড়া করেছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে এসেছে। মারধর, রাতের আঁধারে যুবতী মেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়ে ভিটেমাটিছাড়া করেছেন অসংখ্য পরিবারকে। বুলডোজার দিয়ে মানুষের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়ে দখল করেছেন। রূপগঞ্জবাসী তার ভয়ে তটস্থ থাকে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মডেল মিস আয়ারল্যান্ড মাকসুদা আক্তার প্রিয়তীকে যৌন হেনস্থা করেও গায়েবি শক্তির বলে পার পেয়ে গেছেন। প্রিয়তী ফেসবুক লাইভে এসে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় এমন অরাজকতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এটা দেশের জন্য অসম্মানের।

তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনটি যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এর আগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা টানা এক বছর আন্দোলন করেছি। রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান তালুকদার ও সিনিয়র সদস্য আমির সোহেল মল্লিক।

সর্বশেষ খবর