রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের লড়াইয়ে ২৯ দল, আসনে গড়ে প্রার্থী ৯ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের ৩০০ আসনে মোট ২ হাজার ৭১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৯ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ১ হাজার ৯৬৫ জন, বাকি ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে বিএনপিসহ ১৫ দল এবারের ভোটে নেই। এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার মোট প্রার্থীর এক চতুর্থাংশই স্বতন্ত্র। আর প্রতি আসনে গড়ে প্রার্থী হয়েছেন নয়জন। এদিকে শুক্রবার শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র যাচাই, চলবে সোমবার পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল চলবে ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর। সেগুলো নির্বাচন কমিশনে নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার আগে দলীয়ভাবে জানাতে হবে তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী কারা। যেসব আসনে একাধিক মনোনয়ন এখন রয়েছে, সেখানে চূড়ান্ত প্রার্থী থাকবেন, বাকিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাদ পড়ে যাবেন। এরপর ১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হলে জানা যাবে কারা থাকছেন ৭ জানুয়ারি ভোটের লড়াইয়ে।

আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায়। এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গতকাল বলেন, আমাদের নিবন্ধিত যে ৪৪টি রাজনৈতিক দল আছে, তার মধ্যে ২৯টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। জেডি পিপলস নামে একটি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, যেটি আমাদের নিবন্ধিত দল নয়। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, তাতে দেখা গেছে ২ হাজার ৭১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি এবং একটি স্থানে দুবার জমা দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, আওয়ামী লীগ থেকে ৩০৪ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন।

রাজনৈতিক দল থেকে যত প্রার্থী : আওয়ামী লীগ ৩০৪ জন; জাতীয় পার্টি ৩০৪ জন; তৃণমূল বিএনপি ১৫১ জন; জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ৯১ জন; ইসলামী ঐক্যজোট ৪৫ জন; জাকের পার্টি ২১৮ জন; ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ ৩৯ জন; বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৩৩ জন; কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৩৪ জন; বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৩৭ জন; গণফ্রন্ট ২৫ জন; গণফোরাম নয়জন; ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ১৪২ জন; বাংলাদেশ মুসলিম লীগ দুজন; বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ১৪ জন; বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ৪৭ জন; জাতীয় পার্টি (জেপি) ২০ জন; বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল ছয়জন; গণতন্ত্রী পার্টি ১২ জন; বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ছয়জন; বিকল্প ধারা বাংলাদেশ ১৪ জন; বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১৩ জন; বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১৮ জন; বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) পাঁচজন; বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ৭৪ জন; বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ ৫৫ জন; বাংলাদেশ কংগ্রেস ১১৬ জন; বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ৪৯ জন; বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ৮২ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৭৪৭ জন।

আওয়ামী লীগ ২৯৮টি আসনে দলের মনোনয়ন দিয়েছে তবে পাঁচটি আসনে তথা মেহেরপুর-১; জামালপুর-৫; ময়মনসিংহ-৩; মানিকগঞ্জ-২ ও চট্টগ্রাম-৪ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী দলীয় মনোনয়ন দিতে পারেননি। এ ছাড়া ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের দুজন দলীয় মনোনয়ন দিলেও ৩০ নভেম্বর মুহাম্মদ শাহজাহান ওমনকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া ২৯ দলের মধ্যে আওয়ামী লীগসহ নয়টি রাজনৈতিক দল ‘নৌকা’ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ইসিকে চিঠি দিয়েছে। এগুলো হলো- জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু) ও তরিকত ফেডারেশন। তবে বিকল্প ধারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল হিসেবে অংশগ্রহণ করবে, নির্বাচনে দলীয় প্রতীক কুলা নিয়ে তারা লড়বেন। তবে একই সঙ্গে পরবর্তীতে জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জোটগত প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী দলটি।

সর্বশেষ খবর