শিরোনাম
শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিরপেক্ষ কর্মকর্তার খোঁজে ইসি

গোলাম রাব্বানী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার খোঁজে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রিটার্নিং অফিসারদের ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুতের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা, সততা, সাহস এবং নিরপেক্ষতার দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যদিকে কোনো প্রার্থীর অধীনে কোনো সময় চাকরিতে সরাসরি নিয়োজিত ছিলেন বা আছেন, এমন কোনো ব্যক্তিকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংসদ নির্বাচনে ৪২ হাজারের বেশি ভোট কেন্দ্রের জন্য প্রায় ৯ লাখ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল চূড়ান্তের কাজ চলছে। এ ক্ষেত্রে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার হিসেবে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়োগও চূড়ান্ত হতে পারে। কেননা ২০ ডিসেম্বর থেকে সারা  দেশের ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। নির্বাচন কমিশন বলছে, এবারের সংসদ নির্বাচনে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ইসি। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে জিরো টলারেন্স নীতিতে অনড় থাকবে। এদিকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এবারে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের ভাতা বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। এবারে তাদের দুই দিনের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রায় ৯ লাখ প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের ভোট গ্রহণের ভাতা বাবদ গত নির্বাচনের চেয়ে এবার দিগুণ বরাদ্দ রয়েছে। শুধু ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের ভাতা বাবদ ব্যয় বেড়েছে ২৮০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারের তালিকা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। ৩০০ সংসদীয় আসনের ৬৬ রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছেন উপসচিব আতিয়ার রহমান। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে ভোট কেন্দ্রের তালিকার গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। সেটি মাথায় রেখে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত কেন্দ্র তালিকা পাঠাতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। প্যানেল থেকে ভোটের আগে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এবার প্রায় ১২ কোটি ভোটারের নির্বাচনে ৪২ হাজারের বেশি কেন্দ্রে ভোটকক্ষ থাকছে ১ লাখ ৬২ হাজারের বেশি। এসব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা প্রয়োজন হতে পারে প্রায় ৯ লাখ; প্যানেল প্রস্তুতের সময় অতিরিক্ত সংখ্যক কর্মকর্তা রাখা হয়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। এর দুই সপ্তাহ পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি তারিখ ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার পর যদি পরিলক্ষিত হয় যে, সরকারি গেজেটে প্রকাশিত কোনো ভোট কেন্দ্র কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, তাহলে নির্বাচন কমিশন যে কোনো সময়ে তা পরিবর্তন করতে পারবে। ভোট কেন্দ্রের গেজেট প্রকাশের পরও বিষয়টি পরিলক্ষিত হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হবে। প্যানেলভুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রিটার্নিং অফিসাররা ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের কার্যক্রম চূড়ান্ত করবেন। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/কর্মচারীর মধ্য থেকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার নিয়োগের সময় এসব কর্মকর্তার কর্মক্ষমতা, দক্ষতা, সততা, সাহস এবং নিরপেক্ষতার দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। নারী ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের জন্য যথাসম্ভব নারী সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং নারী পোলিং অফিসার নিয়োগ করতে হবে। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের জন্য যত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকের প্রয়োজন হবে, তার চেয়ে শতকরা ১০ শতাংশ বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষককে প্যানেলভুক্ত করতে হবে। তফসিল ঘোষণার সময় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত সব কর্মকর্তাকে আইন ও বিধি মেনে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। সিইসি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ভোট কেন্দ্রগুলোর পারিপার্শ্বিক শৃঙ্খলাসহ প্রার্থী, ভোটার, নির্বাচনি কর্মকর্তাসহ সর্বসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশিশক্তির ব্যবহার আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে; জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে কোনো মূল্যে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর