শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া যাবে না : প্রধানমন্ত্রী

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া যাবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ বাড়িতে তার নির্বাচনি এলাকা টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সব ভোটার যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেখানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগ, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও টুঙ্গিপাড়ার ৫ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আধা ঘণ্টার এক চা-চক্রে মিলিত হন।

প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা আরও বলেন, কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি অপশক্তি বিচ্ছৃঙ্খলা করতে চেষ্টা করবে। কোনো আবস্থায়ই বিচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। গতকাল সন্ধ্যায় টুঙ্গিপড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ বাসভবনে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠককালে এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনা নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করা যাবে না। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত নির্বাচন আচরণবিধি প্রতিপালন করতে হবে। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। জনগণের দোরগোড়ায় যেতে হবে। সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরতে হবে। সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করে রাজপথে নামাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, আমার মা-বাবা, ভাই নেই। আপনারাই আমার সব। আমার সব কিছুই আপনারা দেখবেন।

বাসন্তী প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থেকে বাসন্তীর জন্য কিছুই করেনি। শুধু ফায়দা লুটেছে। আমি পায়ে হেঁটে বাসন্তীর বাড়ি গিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। আমরা বাসন্তীর অবস্থার পরিবর্তন করেছি। এ সময় বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ-সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাবুদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের ও সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, গোপালগঞ্জ পৌর মেয়র শেখ রকিব হোসেন ও টুঙ্গিপাড়া পৌর-মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুলসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যার পর প্রায় ১ ঘণ্টা এ বৈঠক চলে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানান।  এদিকে  গতকাল বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে দুই দিনের সফরে টুঙ্গিপাড়া  এসে পৌঁছান। তারপর তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বেদির পাশে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে শৃঙ্খল মুক্তির মহানায়কের প্রতি অতল সম্মান প্রদর্শন করেন। এরপর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ফাতেহাপাঠ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের শহীদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন।

প্রার্থনা করা হয় দেশের সুখ, শান্তি, অগ্রগতি, অব্যাহত উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্য। বেলা পৌনে ১টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঢাকার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে সড়কপথে রওনা হন। পদ্মা সেতু হয়ে তিনি বিকাল ৪টায় টুঙ্গিপাড়া এসে পৌঁছান।

আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে টুঙ্গিাপাড়া ও পরে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে বেশ উৎফুল্ল এবং তার নির্দেশনার জন্য অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছেন। নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর