শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের পর প্রতিশ্রুত সংস্কার করা গেলে ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি

আলী রিয়াজ

ভোটের পর প্রতিশ্রুত সংস্কার করা গেলে ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি

ড. জাহিদ হোসেন

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, দেশের আর্থিক খাত বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে। ব্যবসাবাণিজ্যের পরিস্থিতি এ মুহূর্তে সব সূচকেই নেতিবাচক। ডলার ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এর মধ্যে পশ্চিমাদের কাছ থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার হুমকি আসছে।

এটা আমাদের জন্য বড় উদ্বেগের। এ নিষেধাজ্ঞা যদি না আসে, ভোটের পর নতুন সরকার যদি প্রতিশ্রুত সংস্কারগুলো করে ফেলতে পারে তাহলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় ড. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচন কেন্দ্র করে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবে না। ভোট নিয়ে এখন বেশি আলোচনা হচ্ছে। যেহেতু সামনে ভোট তাই হয়তো আলোচনা বেশি। নতুন সরকার গঠনের পর অর্থনীতি কী হবে তা নির্ভর করবে তখনকার কার্যক্রমের ওপর। দাতা সংস্থাগুলো থেকে বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া আছে। এর মধ্যে ব্যাংকিং খাত, বৈদেশিক বাণিজ্য, শুল্ক পদ্ধতি, শ্রম অধিকারসহ আর্থিক খাতে বড় ধরনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে সরকার প্রতিশ্রুত কাজগুলো করেনি। এগুলো করতে হবে। ভোট কীভাবে হচ্ছে তা নিয়ে পশ্চিমারা সম্ভবত নিষেধাজ্ঞা বা কোনো পদক্ষেপ নেবে না। তারা সুনির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ করে পদক্ষেপ নেবে। সেটা অবশ্যই ব্যবসাবাণিজ্য কেন্দ্র করে। এটা ঠিক, যদি প্রতিশ্রুত সংস্কারগুলো পরবর্তী সরকার গ্রহণ করে তাহলে পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে। যে আশঙ্কা অনেকে করছে সেটা হবে না। বরং বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো হবে। তিনি আরও বলেন, পশ্চিমাদের এখন বড় আপত্তির বিষয় অন্য জায়গায়। সুনির্দিষ্ট করেই তারা সরকারের কাছে সেসব বিষয় বলেছে। সরকারকে চিঠি দিয়ে উদ্বেগের বিষয়গুলো জানিয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কারও কথার ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নেবে না। নিষেধাজ্ঞার এখন বড় বিষয় হলো শ্রমিক অধিকার, শ্রমিকের নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিল নিয়ে তারা আপত্তির কথা জানিয়েছে। শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদন এবং ওই দেশগুলোর নিজস্ব পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে একটি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশগুলো ব্যবস্থা নেবে। পশ্চিমারা শুল্কারোপ ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নিয়ে ফেললে পরিস্থিতি সহজ থাকবে না। শ্রম অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে এমনটি যুক্তরাষ্ট্র মনে করলে বা বিশ্বাস করলে এ নীতি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আরোপ করার সুযোগ রয়েছে। এখন তাদের কাছে বাংলাদেশ যদি সঠিকভাবে ব্যাখ্যা না দিতে পারে সংকট বাড়বে। যদি বাংলাদেশ বিষয়টি সহজভাবে তাদের কাছে তুলে ধরতে পারে যে তারা যেসব আপত্তির কথা জানিয়েছে তা সঠিক নয় বা সমাধান করা হবে; এমনটি হলে অর্থনীতি বা ব্যবসাবাণিজ্য ঘুরে দাঁড়াবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর