মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

যে পরিমাণই পাই না কেন, ভালো খবর

অরুণ কর্মকার

যে পরিমাণই পাই না কেন, ভালো খবর

সিলেটের হরিপুরে ১৯৮৬ সালেও আমরা একবার তেলের খনির সন্ধান পেয়েছিলাম। সেই সময় গ্যাসকূপ খনন করতে গিয়েই তেল উঠে আসে। তবে এবার সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের ১০ নম্বর কূপে (অনুসন্ধান কূপ) হরিপুরের মতো ঘটনা ঘটেনি। ১০ নম্বর কূপে পরীক্ষা করে আলাদাভাবে তেল চিহ্নিত করা গেছে। তবে নতুন যে তেলের খনি সন্ধান মিলেছে সেখান থেকে আমরা যে পরিমাণ তেলই পাই না কেন, এটি আমাদের জন্য ভালো খবর। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অরুণ কর্মকার গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ভূতাত্ত্বিকভাবে সিলেট বেল্টে হরিপুর, কৈলাসটিলা- এ দুই এলাকা ধরে আমাদের যে গ্যাসক্ষেত্রগুলো আছে, সেখানে কিছু কিছু পকেট তেলও আছে। তারই একটি ১৯৮৬ সালে আমরা হরিপুরে পেয়েছিলাম। এরপর সর্বশেষ সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের ১০ নম্বর কূপে পাওয়া গেছে। এ জায়গাটিতে আরও দু-চারটি কূপ খনন করলে হয়তো আরও তেলের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে। তবে এখানে আমাদের খুব বেশি মজুদ থাকার সম্ভাবনা নেই। কারণ ভূগর্ভে যে প্রক্রিয়ায় তেল ও গ্যাস তৈরি হয় অর্থাৎ জ্বালানি তেল তৈরি হতে যে সময় লাগে এর সঙ্গে তুলনা করে আমাদের এ অঞ্চলে ভূমির যে গঠন তা তৈরি হতে যে সময় লেগেছে তার সময় কম। অর্থাৎ আমাদের যে ভূমির গঠন তা তৈরি হতে তত বেশি সময় লাগেনি। সেখানকার ভূমির গঠন তত পুরনো না যত পুরনো হলে মাটির নিচে তেল তৈরি হতে পারে। অরুণ কর্মকার বলেন, সিলেটের ওপারে যেটা আসাম অঞ্চল সেখানেও কিছু তেল আছে। ভূতাত্ত্বিকভাবে সেখানে তেল তৈরি হওয়ার যে ধারাবাহিক প্রক্রিয়া বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের সীমান্তের ভিতরের অংশও সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে গেছে। হরিপুরেও পকেট তেল পাওয়া গিয়েছিল। সাড়ে ৫ লাখ ব্যারেল তেল তোলার পর বাণিজ্যিকভাবে এই খনি থেকে তেল উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ সেই কূপে যে পরিমাণ তেল ছিল তা শেষ হয়ে গিয়েছিল। এবার নতুন যে তেল খনির সন্ধান মিলেছে সেখানেও হরিপুরের মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছি। হয়তো সেখানে কিছু বেশি বা কম তেল পাওয়া যেতে পারে। এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ না হলে বলা যাচ্ছে না। এ খনি থেকে খুব বড় সম্ভাবনা না থাকলেও এ অঞ্চলে এমন আরও দু-একটি পকেট তেলের খনির সন্ধান পাওয়া যেতে পারে। এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলেন, যেহেতু এর আগে হরিপুর থেকে আমরা তেল উত্তোলন করেছি এজন্য তেল উত্তোলনের প্রক্রিয়া আমাদের জানা আছে। আর এই তেল ওঠানোর পর ক্রুড পরিশোধন করার জন্য তা ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পাঠিয়ে দিতে হবে বলে মনে করছি। আপাতত নতুন খনি থেকে তেল উত্তোলনের জন্য আলাদা কোনো উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি না।

সর্বশেষ খবর